করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সাড়ে ৩ মাস (১০৬ দিন) পর যুক্তরাজ্যের মসজিদগুলো খোলার অনুমতি দিয়েছে দেশটির সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল শনিবার (৪ জুলাই) থেকে মসজিদ খোলার কথা রয়েছে।
তবে গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) কাউন্সিল অব মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটসের এক বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ১৩ জুলাই থেকে মসজিদগুলো খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংগঠন থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
টাওয়ার হ্যামলেটসের ৪৫টি মসজিদের নেতৃত্বধানকারি সংগঠন কাউন্সিল অব মস্কের চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা শামসুল হক গত বুধবার রাতে জানান, এ নিয়ে মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসে পুরোপুরি একটি গাইডলাইন দেয়া হবে। বৃটেনের অন্যান্য এলাকার মসজিদগুলোর সাথে সমন্বয় সাধন করে তারা মসজিদগুলো খুলতে চান।
গাইডলাইনের মধ্যে থাকবে- মসজিদে আসার সময় মুসল্লিগণ নিজ নিজ প্রেয়ার ম্যাট নিয়ে আসবেন, কমপক্ষে এক মিটার দুরত্ব বজায় রেখে নামাজে দাঁড়াবেন, মাস্ক পরিধান করে আসবেন, পয়ষট্টি বছরের বেশি বয়স্ক বৃদ্ধ এবং ১২ বছরের নিচের বয়সের শিশুরা মসজিদে আসবেন না। মহিলারা আপাতত মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ পড়বেন। যাদের কোনো ধরনের রোগের উপসর্গ আছে তারা মসজিদে আগমন থেকে বিরত থাকবেন। শুধু জামাতে নামাজের আগমুহূর্তে মসজিদ খোলা হবে। জামাত শেষ হলে বন্ধ করে দেয়া হবে। সুন্নাত নামাজ মসজিদে আসার আগে অথবা জামাত শেষে ঘরে গিয়ে পড়বেন। ঘরে অজু পড়ে আসবেন। অতি জরুরী ছাড়া অজুখানা ও টয়লেট ব্যবহারের সুযোগ থাকবে না। মসজিদের এক দরজা দিয়ে মুসল্লিরা প্রবেশ করবেন, অন্য দরজা দিয়ে বের হয়ে যাবেন। জুতা রাখার জন্য ব্যাগ নিয়ে আসবেন। প্রতিটি মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মুসল্লিরা প্রবেশের সময় স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইস্ট লন্ডন মস্ক এন্ড লন্ডন মুসলিম সেন্টার কবে নাগাদ খুলবে এখনও নিশ্চিত নয়। মসজিদের ফাইন্যান্স এন্ড এনগেইজমেন্ট ডাইরেক্টর দেলওয়ার খান বলেন, সরকার ৪ জুলাই থেকে মসজিদ খোলার অনুমতি দিলেও আমরা এখনই খুলে দিতে পারছিনা। আমরা করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ১৩ জুলাই থেকে খোলার চিন্তা ভাবনা অছে।
তিনিও কাউন্সিল অব মস্কের দেয়া গাইডলাইন অনুসরণ করতে মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানান। দেলওয়ার খান আরও বলেন, মসজিদ খুলে দিলেও আমরা মানুষের হেলথ ও সেইফটির কথা অধিক বিবেচনায় রাখছি। যাতে মসজিদে আসার কারণে কোনোভাবেই ফের করোনার বিস্তার না ঘটে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ২৩ মার্চ থেকে গোটা দেশে লকডাউন শুরু হয়। আর লকডাউন শুরু হওয়ার চারদিন আগেই (১৯ মার্চ) ইস্ট লন্ডন মসজিদসহ প্রায় সকল মসজিদ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতোদিনই মসজিদে জুমাসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বন্ধ ছিলো। রামাদ্বানে বন্ধ ছিলো তারাবি’র জামাত, ইতেকাফ এবং ঈদের নামাজও।