ভুঁইফোড় লীগের ৪০ নেতাকে খুঁজছে পুলিশ
মিজানুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার।।
ভুঁইফোড় ও নামসর্বস্ব সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বিগত এক দশকে আওয়ামী লীগ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নাম ব্যবহার করে শতাধিক ভুঁইফোড় এসব সংগঠন গড়ে উঠেছে। ভুঁইফোড় ও নামসর্বস্ব এসব সংগঠনের সাথে জড়িতদের কর্মকান্ডে বিব্রত দলটির হাইকমান্ড। সর্বশেষ ব্যবসায়ী হেলানা জাহাঙ্গীরের ‘চাকরিজীবী লীগ’ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহল হার্ড-লাইনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিন্ধান্তে পৌছে। দলটির পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ভুঁইফোড় সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবস্থান ও নির্দেশনা পেয়ে গত কয়েকদিনে কথিত ওইসব সংগঠন ও নেতাদের একটা খসড়া আমলনামা তৈরি করা হয়। এতে উঠে আসে নামসর্বস্ব ১০৫টি সংগঠনের নাম এবং এসকল সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে সারাদেশে নিয়মিত চাঁদাবাজি, তদবিরবাণিজ্য, ভূমিদখল সহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত এক হাজারের বেশী কথিত নেতার নাম। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, আপাতত ৩৫-৪০ জনের একটি শর্ট তালিকা নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। এ তালিকায় থাকা ব্যবসায়ী হেলানা জাহাঙ্গীরকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। শর্ট তালিকায় থাকা ভুঁইফোড় সংগঠনের সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সদরদপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সরকার এখন ভুঁইফোড় সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের হাইকমান্ড পর্যায় থেকে আমাদের কাছে বেশকিছু নির্দেশনা এসেছে। নির্দেশনা পেয়ে আমরা কাজ করছি। কথিত ওইসব নেতার আমলনামা তৈরি করা আছে। তারা রাজনীতির নাম ভাঙিয়ে নানা অপকর্ম করছেন অনেক দিন ধরেই। এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি ও তদবিরবাণিজ্য, ভূমিদস্যুতা করে এদের অনেকে অঢেল সহায়-সম্পতি বানিয়েছেন। তালিকাভুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রেপ্তার হবেন। অন্যরাও আমাদের নজরদারির মধ্যে রেখেছি।
জানা গেছে, নামসর্বস্ব ১০৫টি সংগঠনের এক হাজারের বেশি কথিত নেতাকে নজরদারির জন্য সারাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে শর্টলিষ্টে থাকা ৩৫-৪০ জন কথিত নেতাকে গ্রেফতারের জন্য মাঠে কাজ করছে র্যাব, পুলিশের একাধিক টিম এবং গোয়েন্দা বাহিনী।
গ্রেফতারের জন্য তালিকায় থাকা নেতাদের মধ্যে যাদের নাম আছে তারা হলেন, বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো: মনির খান। বাংলাদেশ আওয়ামী নবীন লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান সুইট, সাধারন সম্পাদক শরিফুল আলম শাকিল। আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা যুব প্রজন্ম লীগ সভাপতি আবির হোসেন কাফি। বাংলাদেশ আওয়ামী জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এইচ এম ওসমান গনি বেলাল। বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সভাপতি অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ শাহীন হায়দার ও সাধারন সম্পাদিকা সৈয়দা তাহমিনা বেগম। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বাধীনতা প্রজন্মলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো: আনিসুর রহমান। চাকরিজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনির। বাংলাদেশ আওয়ামী সজীব ওয়াজেদ জয় লীগের
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাসু সরদার। বাংলাদেশ আওয়ামী তথ্য প্রযুক্তি লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা: সালাউদ্দিন ভূইয়া নয়ন। বাংলাদেশ জনসেবা লীগের চেয়ারম্যান ডা. ইয়াছিন হাওলাদার মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন।
বাংলাদেশ আওয়ামী তরুন জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আল মামুন জুয়েল ও সাধারন সম্পাদক দিপেন লাল দ্বীপ। বাংলাদেশ আওয়ামী তৃণমূল লীগের সভাপতি শাহেদুল আলম টিপু। বঙ্গবন্ধু তৃণমূল লীগের সভাপতি মো: কাশেম আলী, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান রাজা।
বাংলাদেশ আওয়ামী উদ্যোক্তালীগের প্রস্তাবক মো: জসীম উদ্দীন রুমান। বাংলাদেশ আওয়ামী পর্যটন লীগের সভাপতি শামীম আল জাবের। বাংলাদেশ আওয়ামী প্রজন্ম লীগ সভাপতি মনির আহমেদ মনা, সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম মল্লিক টুটুল। বাংলাদেশ চেতনায় ৭১ লীগের সভাপতি মো: তাজু শেখ। বাংলাদেশ আওয়ামী প্রচার লীগের সভাপতি শেখ ইকবাল। বাংলাদেশ প্রচার ও প্রকাশনা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম. এইচ আলমগীর।