ভারতের মুম্বাইয়ের গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালসের হাত ধরে বাজারজাত হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) চিকিৎসার ওষুধ ফ্যাবি ফ্লু। এরই মধ্যে ওষুধ তৈরি ও বিক্রির ছাড়পত্রও দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)।
ট্রায়াল পুরোপুরি শেষ হওয়ার আগেই করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করেছে চীন। রাষ্ট্রীয় কাজে বিদেশে যাওয়া-আসা করছেন বেইজিং শহরের এমন সরকারি কর্মকর্তাদের ভ্যাকসিন নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ দাবি করেছেন, তুলসীপাতার রসে সারবে করোনা। এদিকে, ৭ দিনের মধ্যেই বাজারে আসছে ‘করোনিল’ নামের একটি ওষুধ।
এ ওষুধে করোনা সারবে বলে দাবি ভারতের যোগগুরু রামদেবের। ব্লুমবার্গ, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ও সংবাদ প্রতিদিন।
সাধারণত মৃদু থেকে মাঝারি উপসর্গের করোনা রোগীদের জন্যই ফ্যাবি-ফ্লু ব্যবহৃত হবে। ডিসিজিআইর দাবি অনুযায়ী, এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধটির কার্যকারিতা ৮৮ শতাংশ।
কো-মর্বিডিটির রোগীদের বেলায়ও এ ওষুধ দারুণ কার্যকর বলে দাবি করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গ্লেনমার্ক।
মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজির অধ্যাপক ও গবেষক তন্ময় বিশ্বাস বলছেন, এখনও নিশ্চিত হওয়ার কিছু নেই, কোনো ড্রাগের চার দফা ট্রায়াল চলে। এখন পর্যন্ত ফ্যাবি ফ্লুর তিন দফা হয়েছে।
এর আগে অনেক ওষুধ তিন দফায় ভালো কাজ করেছে, কিন্তু বাজারে আসার পর নিষিদ্ধ হয়েছে। তবে এ ফ্যাবি ফ্লুর তিন দফা ট্রায়ালের ফল তুলনামূলকভাবে ভালো। এ গ্রুপের ওষুধ আগে ফ্লুর মহামারীর সময় ব্যবহার করা হয়েছিল।
তাতে ভালো কাজও দিয়েছিল। এ ওষুধটিও ভাইরাসের আরএনএ-কে প্রতিরূপ তৈরিতে বাধা দেয়। সুতরাং ফ্লু ভাইরাস দমন করার সব গুণই এতে রয়েছে।
তবে ওষুধ বাজারে আসার পর বোঝা যাবে তা কতটা ফলদায়ক। প্রথম দিনে ১৮০০ মিলিগ্রাম দিনে দু’বার, তারপর ১৪ দিন পর্যন্ত ৮০০ মিলিগ্রাম দিনে দু’বার এভাবে ওষুধটি গ্রহণ করতে হবে।
আপাতত ২০০ মিলিগ্রামের একটি ‘ফ্যাবি ফ্লু’ ট্যাবলেটের দাম পড়বে ১০৩ টাকা। এমন ৩৪টি ট্যাবলেটের একটি পাতার দাম হবে ৩৫০০ টাকা। তবে গ্লেনমার্ক বলছে, বাজারীকরণের পর সাফল্য মিললে এ দাম কমানোর কথাও ভাবা হবে।
এদিকে, কাদের ভ্যাকসিন দেয়া হবে সে বিষয়ে চীনের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি থেকে একটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। চীনে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ভ্যাকসিন হিউম্যান ট্রায়ালের পর্যায়ে আছে।
এর মধ্যে অন্তত দুটি প্রথম দুই ধাপের ট্রায়ালে ‘সফলতা’ পেয়েছে। ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে সাধারণত তিনটি ধাপ থাকে।
চীন জানিয়েছে, তাদের দেশে সংক্রমণ কমে আসায় ব্রাজিলে চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়াল চালানো হবে। এর ভেতর বেইজিংয়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
প্রথমে চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপ বা সিএনবিজির ভ্যাকসিন দেয়া হবে। পরে পরিধি বাড়িয়ে বেইজিংয়ের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তুলসীপাতার রসে সারবে করোনা- এমন দাবি করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ হাসির পাত্র হয়েছেন।
তার এ মন্তব্যের পরই শুরু হয়েছে বিতর্ক। কালনা হাসপাতালের সুপার বলেন, তুলসীপাতা অবশ্যই উপকারী। তবে করোনার প্রতিষেধক হিসেবে শুধু তুলসীর রস যে কার্যকর- এমন প্রমাণ মেলেনি।
কালনা মহকুমা হাসপাতালের এক একর জমিতে ভেষজ গাছ লাগানোর কর্মসূচি নিয়েছিল বর্ধমান জেলা প্রকৃতি ও পশুপ্রেমী সংস্থা। রোববার সেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তুলসীপাতা যেমন পুজোয় লাগে, তেমনি তা মানব শরীরের জন্যও উপকারী। করোনার প্রতিষেধকের কাজ করে তুলসী।
পতঞ্জলির প্রতিষ্ঠাতা ও যোগগুরু রামদেব দাবি করেছেন, ‘করোনিল ও স্বসারি’ নামের ওষুধগুলো সারা দেশে ২৮০ জন রোগীর ওপর গবেষণা ও পরীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
রোগীদের ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলাকালীন ১০০ শতাংশ সাফল্য মিলেছে বলেই দাবি করেছে রামদেবের পতঞ্জলি সংস্থা।