নিউজ ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিমান হামলার জবাবে প্রায় এক হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে হামাস সশস্ত্র গোষ্ঠি। এদিকে গাজা উপত্যকা থেকে হামাসের অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ইসরাইলের এক সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। এছাড়া ইসরাইলের গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল জানায়, হামাসের ক্ষেপণাস্ত্রে আরো দুই সেনা নিহত হয়েছে।
টাইমস অব ইসরাইল জানায়, বুধবারের ওই হামলায় নিহত সেনা কর্মকর্তার নাম ওহম তাবিব। স্টাফ সার্জেন্ট পদবির ওই ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা নাহাল ইনফ্রান্টি ব্রিগেডের ৯৩১ ব্যাটিলিয়নের সদস্য। এদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে সেনা কর্মকর্তার নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। তারা আরো জানিয়েছে দুই আহত সেনা সদস্যকে সুস্থ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ২০১৪ সালের যুদ্ধের পর ইসরাইল-হামাসের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই। েরই মাঝে প্রথম সামরিক বাহিনীর সদস্যের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করলো ইসরাইল।
এদিকে আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৪ শিশুসহ ৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। ইসরায়েলি হামলায় গাজার একটি বহুতল ভবন ভেঙে পড়েছে। আরেকটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মিলিটারি ডিফেন্স ফোরাম এর সূত্র মোতাবেক উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সালের যুদ্ধের পর ইসরাইল-হামাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই শুরু হয়েছে, আল আকসা মসজিদে বর্বোচিত হামলার প্রেক্ষিতে এই লড়াই শুরু হয়েছে। ইসরায়েলির সেনাবাহিনী বলেছে, গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে ছয় ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আটজন। বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালাচ্ছে হামাস। তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিও বেশ শক্তিশালী।
হামাস যে সকল রকেট ব্যাবহার করে ইসরাইলের আগ্রাসনের জবাব দেয়……..
হেভি মর্টার:হামাস বিভিন্ন ধরনের হেভি মর্টার ব্যাবহার করে থাকে। সাধারণত ৬ মাইল বা ১০কিলোমিটার রেঞ্জের হয় এই হেভি মর্টার।
কাসাম রকেট: তাদের সর্বাধিক ব্যাবহৃত রকেট হচ্ছে কাসাম রকেট। এর নির্মাণ ও ডিজাইন করেছে হামাস এর সামরিক উইং লাযয আদ-দ্দিন আল কাসাম ব্রিগেড। ২০০১ সালে সার্ভিস এ আসা এই রকেট হয়ে উঠেছে হামাসের প্রথম পছন্দ। এর বিভিন্ন ভেরিয়েন্ট আছে যা ৫কিলোমিটার থেকে ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। বেশিরভাগ কাসাম আয়রন ডোম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দ্বারা ইন্টারসেপট হবার পরও ভালো হারে দখলদার ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতি করেছে।
গ্রাড রকেট:পুরোনো মডেলের সোভিয়েত রাশিয়ার তৈরি গ্রাড রকেট ও হামাসকে ব্যাবহার করতে দেখা যায়। যা প্রধানত মাল্টিপল রকেট লঞ্চার সিস্টে থেকে নিক্ষেপ করার জন্য তৈরি। যেগুলোর রেঞ্জ ৩০ মাইল বা ৪৮ কিলোমিটার এর মত হয়ে থাকে।
ফাজর ফাইভ : ফাজর ফাইভ নামক ৩৩৩ মিলিমিটার লং রেঞ্জ রকেট ও রয়েছে হামাস এর অস্ত্র ভান্ডারে। এটিও একটি মাল্টিপল রকেট লঞ্চার সিস্টেম এর জন্য তৈরি রকেট। যা অত্যন্ত কার্যকরী ভাবে ব্যাবহৃত হয়ে আসছে। এর রেঞ্জ ৪৫ মাইল বা ৬৮-৭৫ কিলোমিটার এর মত হয়ে থাকে।
এম থ্রই জিরো টু: সিরিয়ান মেড ৩০২মিলিমিটার খাইবার ১ বা এম থ্রি জিরো টু হামাস এর ব্যাবহৃত সবচেয়ে লং রেঞ্জ রকেট। যা চাইনিজ ডাব্লিউ এস ওয়ানের এর কপি। এটি প্রধানত একটি আনগাইডেড রকেট। এর রেঞ্জ ১০০ কিলোমিটার যা হামাসের সর্বোচ্চ রেঞ্জ। ২০০৬ সালে লেবানন যুদ্ধে হিজবুল্লাহ এর ব্যাবহার করে ইসরাইল এর ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
কাসাম রকেট তাদের হামাসের প্রযুক্তি ও উৎপাদিত। এছাড়া বেশিরভাগ রকেট এর উৎস সিরিয়া, ইরান,হিজবুল্লাহ।