নিখাদ ডেক্স : ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ১০ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ শুরু হয়েছে দলগুলোর মধ্যে। এমন অবস্থায় সহিংসতার বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে প্রতিবেদন চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। খবর বিবিসি বাংলা’র।
সহিংসতার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে দায়ী করে বিজেপি বলেছে, তৃণমূল বড় জয় পাওয়ার পরেও এ ধরণের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য। তবে রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
তৃণমূল কংগ্রেস ২১৩টি আসনে জয় পেয়ে তৃতীয়বারের মতো পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় বসছে। তবে এবারের নির্বাচনের শুরু থেকেই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যকার চরম বিরোধ উত্তাপ ছড়িয়েছে। নির্বাচন চলাকালেও কয়েকটি জায়গায় সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছিলো।
তারই জের ধরে রোববার ভোট গণনা শেষ হওয়ার পরপরই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠে। সোমবার রাত পর্যন্ত এসব সহিংসতায় অন্তত দশ জন নিহত হয়েছে বলে সরকারি সূত্রগুলো বলছে। বেশ কিছু জায়গা থেকে বোমাবাজি, ভাংচুর ও লুটতরাজের খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে পাঁচ জনকে বিজেপি তাদের কর্মী বা সমর্থক দাবি করেছে। আর তৃণমূল বলছে, তাদের চার জন এবং ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফোর্স বা আইএসএফ বলছে তাদেরও একজন নিহত হয়েছে প্রতিপক্ষের হামলায়।
সোমবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সাথে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জীর সাক্ষাৎকালেও সহিংসতার প্রসঙ্গ এনেছিলেন রাজ্যপাল। জবাবে মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনই আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করছে। তবুও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যা করার তা আমি দেখবো।’
তিনি বলেছেন, ‘যদিও আমরা জানি বিজেপি ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী অনেক অত্যাচার করেছে। তাও আমাদের শান্তি বজায় রাখতে হবে।’
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘এতো বিপুল সমর্থন নিয়ে তৃণমূল জিতেছে তারপরেও কেন হিংসা। পুলিশের সামনে আগুন, লুটতরাজ হচ্ছে কিন্তু পুলিশ কিছু বলছেনা। এটা মেনে নেয়া যায় না।’
জানা গেছে, সহিংসতায় শীতলকুচি, দীনহাটায়, কলকাতায় ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় একজন করে নিহত হয়েছেন। বিজেপি তাদের কর্মী দাবি করে এ হত্যাকাণ্ডের জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেছে।
অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানে তিনজন নিহত হয়েছেন, নিজেদের কর্মী দাবি করে তাদের হত্যার জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছে তৃণমূল।
এছাড়া আব্বাস সিদ্দিকীর ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফোর্স বা আইএসএফ উত্তর চব্বিশ পরগনায় তাদের একজন কর্মীকে হত্যার জন্য তৃণমূলকে অভিযুক্ত করেছে।
এদিকে নির্বাচনে জয়ী তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী কাল বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে আবারও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য আড়ম্বরহীন শপথ অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছেন তিনি।