নিখাদ ডেক্স : বিয়ের প্রলোভনে দুই বছর ধরে বিভিন্ন হোটেল-রিসোর্টে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার করা ধর্ষণ মামলায় হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সকালে, সোনারগাঁও থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর এ কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা ভিকটিমের মেডিক্যাল টেস্ট করিয়েছি। আমরা অন্যান্য কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। বিশেষ করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, মামলার যত এভিডেন্স আছে সেগুলো সংগ্রহ করা। এ মামলাটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখার চেষ্টা করবো।’
এদিকে, গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাকে কয়েক দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) শাপলা চত্বরে সহিংসতার মামলায় তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
এর আগে, শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) সকালে, বড় ছেলে আব্দুর রহমান জামিকে নিয়ে সোনারগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন জান্নাত। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালে বিবাহ বিচ্ছেদের পর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় দুই বছর ধরে বিভিন্ন হোটেল রিসোর্টে নিয়ে ঝর্ণার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক যৌন লালসা চরিতার্থ করেন মামুনুল। স্বামী শহীদুল ইসলামের সঙ্গে সংসার ভাঙার পেছনে মামুনুলেরই ভূমিকা ছিলো বলে উল্লেখ করেন ঝর্ণা।
মামলার এজাহারে তিনি আরো জানান, ২০০৫ সালে মামুনুলের সঙ্গে তার পরিবারের পরিচয়ের আগ পর্যন্ত তাদের সংসার ভালোভাবেই চলছিলো। মামুনুলের সঙ্গে পারিবারিক ঘনিষ্ঠতাই স্বামী শহীদুলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার কারণ, অবশেষে ২০১৮ সালে বিচ্ছেদ। বিয়ের পর অসহায় হয়ে পড়লে তাকে সাহায্যের নাম করে ঢাকা নিয়ে এসে নিজের মনের ইচ্ছে পূরণ করে মামুনুল। বিয়ের কথা দিলেও কার্যত তা পূরণে মামুনুল নানা অজুহাতের আশ্রয় নিতো বলে অভিযোগ করেন ঝর্ণা।
মামলা করার পর জান্নাত আরা ঝর্ণা বলেন, ‘আমার সরলতার সুযোগ নেয়া হয়েছে। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। অনেক বড় ধোকা দেয়া হয়েছে। আমি রাষ্ট্রের কাছে এর সঠিক বিচার চাই। আমি এখন ভালো আছি। তবে আমি শুধু এটাই বলতে চাই সঠিক বিচার চাই আমি।’
মামলা দায়েরের পর নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে ঝর্ণার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে এক নারীর সাথে ধরা পড়েন হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক। প্রাথমিকভাবে সেই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও পরবর্তীতে নানাভাবে প্রশ্ন ওঠে এর সত্যতা নিয়ে।