নিখাদ ডেক্স : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য সন্তান শহীদ শেখ জামাল এর ৬৮ তম শুভ জন্মদিনে তাঁর সমাধিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য সন্তান শহীদ শেখ জামাল এর ৬৮ তম শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে আজ ২৮ এপ্রিল রোজ বুধবার সকাল ১০ টায় বনানী গোরস্থানে শহীদ শেখ জামাল এর সমাধিতে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক জননেতা আফজালুর রহমান বাবু’র নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এসময় সংগঠনের সভাপতি জননেতা নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন
বঙ্গবন্ধুকে অধিকাংশ সময় জেলে থাকতে হয়েছিল বলে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং বড় বোন শেখ হাসিনা শেখ জামালকে ছোটবেলা থেকেই দিক নির্দেশনা দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের জন্ম হয়। তিনি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ থেকে ম্যাট্রিক ও ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন।
শেখ জামাল ছিলেন পিতার মতো নিরহঙ্কার, নির্ভীক ও দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক। পরিবারের সাংস্কৃতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা শেখ জামালের পছন্দ ছিল সুর, সে কারণেই শিখতেন গিটার। ক্রিকেটার হিসেবেও ছিল তার বেশ সুনাম। ছিলেন রাজনীতিতে আগ্রহী ও সচেতন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৫ আগস্ট ধানমণ্ডির ১৮ নম্বর রোডের বাড়িতে গৃহবন্দী থাকাকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তীক্ষ্ণ নজর থেকে পালিয়ে ভারতের আগরতলা চলে যান শেখ জামাল। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে পৌঁছান উত্তর প্রদেশের কালশীতে। মুজিব বাহিনীর ৮০ জন নির্বাচিত তরুণের সঙ্গে ২১ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন শেখ জামাল। তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধা। রাইফেল কাঁধে অসীম সাহসের সঙ্গে পাকিস্তানি শত্রুর মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে মুক্ত করে স্বগৌরবে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে। শহীদ শেখ জামাল তরুণ প্রজন্মের কাছে আদর্শ হয়ে থাকবে আজীবন। বাঙালি চিরদিন বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান কে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন যুদ্ধের ময়দানে কিংবা পালানোর সময় পাকিস্তানি সেনাদের হাতে ধরা পড়লে তাঁর মৃত্যু ছিল অনিবার্য। মৃত্যু ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে জাতির পিতার সন্তান হয়েও মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন শেখ জামাল!
শেখ জামাল পিতা শেখ মুজিব ও মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আশীর্বাদ নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পূর্ণাঙ্গরূপে গঠিত হলে তিনি সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচের কমিশন্ড অফিসার হন। লন্ডনে লেখাপড়ার পরে তিনি হন লেফটেন্যান্ট। পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ করে রাখতেন সবাইকে। সৈনিক থেকে সিনিয়র অফিসার, সকলেরই নয়নমণি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কাজের প্রতি একনিষ্ঠতা আর অহংকারহীন জীবনযাপনে সবাইকে আপন করে নিয়েছিলেন। আর সেই কারণেই তিনি তার পরিচিতদের কাছে হয়ে আছেন ইতিহাসের অনন্য উজ্জ্বল অংশ।
জীবন যখন নির্মাণের ধাপগুলো স্পর্শ করছে ঠিক তখনই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ জামালকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। ঘাতকের বুলেট তাঁর স্মৃতিকে বিলোপ করতে পারেনি বরং মৃত্যু অমর করেছে শেখ জামালের অবদানকে। বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ জামাল কে বিনম্র চিত্তে স্মরণ রাখবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি ড. জমির উদ্দিন শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সায়েম, গ্রন্থণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, মৎস ও প্রাণী সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলাল প্রমুখ।