নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, ‘আপনি বিশ্বের দারুণ এক অনুপ্রেরণাদায়ী নেতা।’
আজ বিকেলে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি বলেন, ‘আমি আপনার অনুরাগী।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাক্ষাৎ শেষে সংবাদকর্মীদের ব্রিফ করেন। নেপালের প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উল্লখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। নারী ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে বিদ্যা দেবী ভান্ডারি বলেন, জাতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ রোল মডেল হতে পারে।
সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা অর্থবহ সহযোগিতা চাই।’
নেপালের প্রেসিডেন্ট সারের প্রয়োজনের সময় বাংলাদেশের তাৎক্ষণিক সহায়তা পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। নেপালকে বাংলাদেশের বন্দর সুবিধা এবং সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করার প্রস্তাবের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
নেপালের প্রেসিডেন্ট বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। উভয় দেশই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দু’দেশই দুর্যোগ মোকাবেলায় নিজ নিজ সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে।
নেপালের প্রেসিডেন্ট নেপালি ভাষায় অনুদিত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বই দু’টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগদানে বাংলাদেশ সফরে আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহসহ তাঁর দেশের সমর্থনের জন্য বিদ্যা দেবী ভান্ডারীকে অভিনন্দন জানান। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নেপালের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী নেপালকে চট্রগ্রাম ও মংলা বন্দর এবং সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেন।
এপ্রসঙ্গে, তিনি বলেন, ‘আমরা সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে একটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নীত করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে অগ্রধীকার বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পিটিএ চুক্তি দু’দেশের জন্য লাভজনক হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া তিনি বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল) সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগ শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এতে এই অঞ্চলের বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের সাথে যৌথ সহযোগিতায় নেপালের পানি সম্পদ ব্যাবহার করে হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও পিএমও সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন নেপালের প্রেসিডেন্টের কন্যা উষা কিয়ান ভান্ডারী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রদীপ কুমার গ্যেওয়ালি ও নেপাল একাডেমির চ্যাঞ্চেলর গঙ্গা প্রায়াদ উপ্রেতি।- বাসস