মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের প্রতি দিকনির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখেন ভিডিও কনফারেন্সে

জাতীয় প্রচ্ছদ

বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের প্রশংসা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের পুলিশ বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বিশেষ করে আমাদের নারী পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা আমরা শুনতে পাই।’


আজ ৩রা জানুয়ারী রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজশাহীর সারদায় ৩৭তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করি বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে এবং আমরা গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশের মানুষের জীবনের শান্তি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করব ইনশাল্লাহ।”

বাংলাদেশের পুলিশকে জাতির পিতা ‘স্বাধীন দেশের পুলিশ’ বলেছিলেন উল্লেখ করে ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি জাতির পিতা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ সপ্তাহে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

উক্ত অনুষ্ঠানে জাতির পিতার দেওয়া ভাষণ থেকে উদ্ধৃত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতা বলেছিলেন- ‘একটা কথা ভুললে চলবে না তোমাদের, তোমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ, তোমরা ইংরেজের পুলিশ নও, তোমরা পাকিস্তানী শোষকদের পুলিশ নও, তোমরা জনগণের পুলিশ। তোমাদের কর্তব্য জনগণকে সেবা করা, জনগণকে ভালোবাসা, দুর্দিনে জনগণকে সাহায্য করা’।

“অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ একটা কথা এবং নির্দেশনা জাতির পিতা দিয়ে গেছেন। আজকে নবীন পুলিশ অফিসাররা তোমরা শপথ গ্রহন করেছে, সেই শপথ নিয়েই তোমাদের চলতে হবে। সেই সাথে জাতির পিতার নির্দেশনাগুলোও তোমাদের মেনে চলতে হবে।”

জাতির পিতার চিন্তার বাস্তবায়ন করতে হলে পুলিশ বাহিনীর অনেক দায়িত্ব রয়েছে উল্লেখ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, “আমি আশা করি এই দায়িত্বটা পালন তোমরা করবে। তোমরা যে জ্ঞান অর্জন করেছ, প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করেছ, তোমাদের শৃঙ্খলা, পেশাদারিত্ব, সততা এবং নৈতিক মূল্যবোধ নিয়ে চলতে হবে। সব সময় দেশের মানুষের পাশে থাকতে হবে। মানুষের সেবা করতে হবে। মানুষের সেবা করাটাই তোমাদের কর্তব্য। সেটা মনে রাখতে হবে।” 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাশেখ হাসিনা বলেন, “অসহায়, বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত মানুষের প্রতি আন্তরিকভাবে সহযোগিতা ও মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেবে এবং জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

“এক্ষেত্রে আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আরও একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করতে চাই। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘মনে রাখবেন, আপনাদের মানুষ যেন ভয় না করে। আপনাদের যেন মানুষ ভালোবাসে। আপনারা জানেন, অনেক দেশে পুলিশকে মানুষ শ্রদ্ধা করে। আপনারা শ্রদ্ধা অর্জন করতে শিখুন।”

“পুলিশ বাহিনীকে তিনি এই আহ্বানটি করেছিলেন যে, পুলিশকে মানুষের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করতে হবে, মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। আর মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে পারলে, আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করতে পারলে মানুষকে সাথে নিয়েই এদেশে যেকোনো অপরাধ দমন করা যাবে। কাজেই সেভাবেই নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে,” বলেন সরকার প্রধান জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং সম্ভ্রমহারানো মা-বোনের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করার পাশপাশি মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকার কথা তুলে ধরে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।


পুলিশ বাহিনীর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেন, ‘পুলিশের সার্বিক উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। পুলিশ বাহিনী অনেক সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। নানাবিধ অপরাধ সংঘটিত হয়, সেগুলো দমন করা এবং পুলিশকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিই। নতুন নতুন ইউনিট আমরা গড়ে তুলি।’

এ প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘পুলিশের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ, শিল্প পুলিশসহ বিভিন্ন পুলিশ আমরা গড়ে তুলি। কারণ বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রটা ভিন্ন, সেজন্য ট্রেনিংটাও সেভাবে দেওয়া দরকার। সেদিকটায় লক্ষ্য রেখে পদক্ষেপ নিয়েছি।

প্রশিক্ষণে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী পুলিশ সদস্যদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল পদক দেন।


তাছাড়া রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। স্বাগত বক্তব্য দেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন।  

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জাসহ অন্যান্য অতিরিক্ত আইজিপিবৃন্দ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং আইজিপি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী চত্বরে একটি করে গাছের চারা রোপণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *