জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটি যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহী তিনটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের রানওয়ে উন্নয়নের জন্য ৫৬৬ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পসহ ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়সংবলিত চারটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
এর মধ্যে সরকারি অর্থায়নে ১ হাজার ৫২৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৪৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে নিরাপদে বিমান অবতরণ এবং বিমানের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করার লক্ষে সরকার গৃহীত প্রকল্পও রয়েছে।
একনেক-এর চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ‘যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও রাজশাহী’র শাহ মখদুম বিমানবন্দরের রানওয়ে সারফেসে অ্যাসফল্ট কংক্রিট ওভারলেকরণ’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দু’টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কদমরসুল অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্প ও ‘মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন-১ম সংশোধিত’ প্রকল্প এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘ভূ-উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যমে বৃহত্তর দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলায় সেচ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনার বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের সভায় তিনটি মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একনেক সভায় এই চারটি প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৫২৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৪৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা।’
অনুমোদিত চারটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি প্রকল্প নতুন এবং বাকি একটি সংশোধিত।
‘যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও শাহ মখদুম বিমানবন্দর, রাজশাহী’র রানওয়ে সারফেসে অ্যাসফল্ট কংক্রিট ওভারলেকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, প্রকল্পটি ২০২১ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে ৫৬৬.৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই প্রকল্পের প্রধান কাজগুলির মধ্যে রয়েছে-বিমানবন্দর রানওয়েতে অ্যাসফল্ট কংক্রিট ওভারলেকরণ’, এয়ার ফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেমের আপগ্রেডিং, রানওয়ে সাইড-স্ট্রিপসসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রতিটি বিমানবন্দরের জন্য আধুনিক আগুন নেভানোর গাড়ি সংগ্রহ।
প্রকল্পের অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলিতে যথাযথ লাইটিং ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন যাতে বিমানগুলো রাতে উঠা-নামা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘যেহেতু, বিমান বন্দরগুলোর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে, তাই, সেখানে লাইটিং সিস্টেম ইনস্টল করতে হবে যাতে এই অভ্যন্তরীণ বিমান বন্দরগুলোতে রাতের বেলাতেও বিমান উড্ডয়ন এবং অবতরণ করতে পারে।’
এ বিষয়ে একনেক বৈঠকে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব জানান যে, রানওয়ে উন্নয়নের কাজ শেষ হওয়ার পরে বিমানবন্দরগুলোতে লাইটং ব্যবস্থা স্থাপনের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বিকাশের পর ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের সাথে সাথে বিমান বন্দরগুলো পর্যায়ক্রমে যথাযথভাবে আধুনিকায়ন করতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব, এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।