হেফাজতে ইসলামীর আমির ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার সাবেক মহাপরিচালক (মুহতামিম) আল্লামা শাহ আহমদ শফী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) ।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে তিনি পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এর আগে বিকেলে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নেয়া হয়। আজ দুপুরে তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন চট্টগ্রাম মেডেকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শফী। সন্ধ্যায় শুরা কমিটির বৈঠকে মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদ থেকে স্বেছায় পদত্যাগ করার পরপরই তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকালে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বিকেলে তাকে ঢাকার আজগর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শাহ আহমদ শফীর জন্ম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পাখিয়ারটিলা গ্রামে। তিনি দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জনক। আল্লামা শফীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা কানুরহাট মাদ্রাসায়। এরপর পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসায় (পটিয়া জিরি মাদ্রাসা) পড়াশোনা করেন তিনি।
পরে হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক (মুহতামিম) হিসেবে দায়িত্ব নেন শাহ আহমদ শফি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন।
দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো এবং বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি।
১০৪ বছর বয়সী এ প্রবীণ আলেম ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ফলে, প্রায়ই তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। গত কয়েক মাসে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিলে একাধিক বার চট্টগ্রাম ও ঢাকার হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা নিতে হয় আল্লামা আহমদ শফিকে।