আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যে সকল জেলা, মহানগর এবং সহযোগী সংগঠগুলোর সম্মেলন হয়েছে কিন্তু পুর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি, তাদের আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুর্নাঙ্গ কমিটি জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দলের দপ্তর বিভাগে দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করে জমা প্রদানের আহ্বান করছি। যে সকল জেলা, মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন হয়েছে, পুর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি; সেই কমিটি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেয়ার জন্য সংগঠনের সকল শাখার প্রতি নির্দেশনা দিচ্ছি।’
ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়স্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের সম্পাদকমন্ডলীর সভায় সভাপতির বক্তব্যে এই নির্দেশনা প্রদান করে।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বলেন, আগামীতে যে সম্মেলনগুলো হবে সেগুলো সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেই করবো। উপজেলা সম্মেলন, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড বাদ দিয়ে জেলা সম্মেলন করার কোনো মানে হয় না। কাজেই আমাদের একেবারেই তৃনমুল থেকে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।
এখন থেকে আমাদের সীমিত আকারে সারা বাংলাদেশে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই দলের সভাপতিমন্ডলীর সভা হবে। এরপর কার্য নির্বাহী কমিটির সভা করার চিন্তা-ভাবনা আছে।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডে জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদ ছিলো এবং এটা দিবালোকের মতো পরিস্কার জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল ফারুক, রশিদ, মাজেদরা মিডিয়ায় নিজেদের সাক্ষাৎকারে বলেছে। জড়িত ছিলো বলেই খুনিদের পুনর্বাসন ও বিচার কার্য বাধাগ্রস্থ করতেই জাতির পিতার হত্যাকান্ডের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংবিধানে পাশ কারে দায়মুক্তির বিধান করে। আমরা বুঝতে পারি না, ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পরীক্ষিত এই সত্যকে বিএনপি অস্বীকার করে কিভাবে?”
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীতে থাকা খালেদ মোশাররফ, কর্নেল হুদা, হায়দারসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ও সৈনিককে নির্মমভাবে হত্যা করে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রাণ ভোমরাকে আবদ্ধ করে সামরিক ছায়ায় হ্যাঁ-না ভোটের ক্যানভাসে ১১০ ভাগ ভোটও জিয়াউর রহমান সেদিন পেয়েছিলেন। এটাই হচ্ছে বহুদলীয় গণতন্ত্রের নমুনা।
‘১৫ আগস্ট নিয়ে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে’-বিএনপি মহাসচিবের অভিযোগের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি জানতে চাই, মির্জা ফখরুল সাহেব এই খুনিদের কারা নিরাপদে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলো? বাংলাদেশের বিদেশি দুতাবাসে চাকির দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলো? যাতে খুনিদের বিচার না হয় সেজন্য মোশতাকের ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছিলো? এর জবাব আপনাদের দিতে হবে।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট এলেই আপনাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায়। ইতিহাসের সত্যকে আপনাদের ভালো লাগে না। তবে একটা কথাই সত্য যে, সত্য জাতির কাছে চাপা দিয়ে কারো কোনো লাভ নেই। জিয়াউর রহমানের এই ভুমিকাকে ১৫ আগষ্টের খুনিদের এসব সুবিধা কে দিয়েছিলো? বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম এই জবাব চায়।”
সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামল হোসেন, এডভোকেট আফজাল হোসেন ও মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজ ক্যলাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।