জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য খ্যাতিমান কথা সাহিত্যিক রাহাত খান আর নেই।
আজ শুক্রবার রাত সাড়ে আটটায় তিনি ইস্কাটন গার্ডেনের নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।
তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আগামীকাল শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার মরদেহ আনা হবে।
রাহাত খান ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামের খান পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন। শিক্ষা জীবন শেষে রাহাত খান ময়মনসিংহ জেলার নাসিরাবাদ কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও চট্টগ্রাম সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রাহাত খান ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন। এ ছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৩), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫), সুফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার (১৯৭৯), আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২), ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮) এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় একুশে পদক (১৯৯৬) পেয়েছেন।
বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতা জীবনে রাহাত খান কথাশিল্প, ছোটগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও উপন্যাসের নিপুণ কারিগরে পরিণত হন। ১৯৭২ সালে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘অনিশ্চিত লোকালয়’ প্রকাশিত হয়। তার পরবর্তী উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-অমল ধবল চাকরি, ছায়াদম্পতি, শহর, হে শূন্যতা, হে অনন্তের পাখি, মধ্য মাঠের খোলোয়াড়, এক প্রিয়দর্শিনী, মন্ত্রিসভার পতন, দুই নারী, কোলাহল ইত্যাদি।
জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন এক বিবৃতিতে রাহাত খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় তারা বলেন, রাহাত খানের মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি হল। তারা মরহুমের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।