মন্ত্রিসভা আজ সোমবার স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে প্রণীত আইনগুলো বাতিল না করার এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে ওই সময়ের আইনগুলো হালনাগাদ বা নবায়ন করা যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকের পর ভার্চুয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মধ্যে যেসব আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল সেগুলোর পরিবর্তে নতুন কোন আইন করা হবে না। তবে, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সেগুলোর সংশোধন করা যেতে পারে।’
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জনগণ, রাজনৈতিক ও শাসন পদ্ধতি গবেষকরা যেন এই ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পায় যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কিভাবে স্বাধীনতা উত্তর সরকার নতুন একটি দেশকে পরিচালিত করেছে সেজন্যই মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মন্ত্রিসভা ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ ও ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা আইনগুলোকে নিয়মিত আইনে পরিণত করার এবং এগুলোর মধ্যে অপ্রয়োজনীয় কিছু আইন বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন বিভাগকে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এই ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরা সচিবালয় থেকে এতে সংযুক্ত হন।
সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন সংক্রান্ত একটি খসড়া আইন পর্যালোচনার করার সময় এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।
তিনি বলেন, সংশোধীত এই আইনটিকে এখন ‘বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডার, ১৯৭৩’ নামে উল্লেখ করা হবে।
তিনি বলেন, সংশোধীত আইন অনুযায়ী এই সংস্থাটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধনের পরিমান ৫০০ কোটি টাকা পুণর্নির্ধারণ করা হয় পাশাপাশি এর কর্মকান্ডের আওতা বাড়ানো হয়।
পাশাপাশি, খসড়া আইনে এর আওতায় অপরাধের দায়ে একই সঙ্গে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সশ্রম কারাদ-াদেশ ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। যে ধরনের অপরাধের জন্য আগের আইনে লঘু দন্ডের বিধান ছিল।
তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা আজ ‘ব্যাঙ্কারস বুক এভিডেন্স অ্যাক্ট, ২০২০’ এবং ‘জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা নীতি, ২০২০’ খসড়ায় নীতিগত সমর্থন দিয়েছে। বিদ্যমান ১৮৯১ সালের আইনের অনেক কিছুই বর্তমান সময়ের বাস্তব পরিস্থিতির উপযোগী নয়। তাই সংশোধন করার পরে অনুমোদনের জন্য ‘ব্যাঙ্কারস বুক এভিডেন্স অ্যাক্ট, ২০২০’ এর খসড়াটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া, ব্যাংকগুলো এখন ডিজিটালভাবে কাজ করছে যার উল্লেখ পূর্ববর্তী আইনে নাই। খসড়া আইন এটি উল্লেখ করা করেছে।
আনোয়ারুল বলেন, প্রস্তাবিত আইন আদালতের অনুমতি নিয়ে গোপনীয় ব্যতীত অন্যান্য তথ্য প্রকাশের পরামর্শ দিয়েছে এবং এটি করার জন্য কর্তৃপক্ষ স্থির করে দিয়েছে। খসড়া আইনে অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি দেয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে তিনি এবিষয়ে বিশদ বিবরণ দেননি।
‘জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা নীতি, ২০২০’ সম্পর্কে আনোয়ারুল বলেন, মূলত খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, বিপণন ও সংরক্ষণে পুষ্টি এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রিসভা নীতিটিকে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কথা মাথায় রেখেই এ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।