পণ্য কিনলেই অর্থ ফেরতের অস্বাভাবিক ক্যাশ ব্যাক অফার দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকরে কাছ থেকে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থেকে ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই ভ্যালি ইকমার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ৩ কর্মীকে প্রায় ৩৯ লাখ টাকাসহ আটক করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। সোমবার (২৪ আগষ্ট) দুপুরে সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের পারিল বাজারে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির স্থানীয় অফিস থেকে তাদের আটক করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুনা লায়লা। আটককৃতরা হলো, ই ভ্যালি ইকমার্স এর ব্যবস্থাপক বিপ্লব হোসেন (২৪), সহকারি ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম (২৭) ও অফিস সহকারি মো: জামাল হোসেন (৩৮)। তারা ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই ভ্যালির নামে শাখা অফিস খোলে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের পারিল নোয়াদ্দা গ্রামের ফজল হকের ছেলে কামাল হোসেন তার স্ত্রী হেনা আক্তার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন একটি দ্বিতল ভবনে ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই ভ্যালির শাখা অফিস ই ভ্যালি ইকমার্স নামে একটি অফিস খোলে ৭ মাস ধরে ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক বা ১০০ টাকার পণ্য কিনলে সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি অর্থ ফেরত দেওয়ার লোভনীয় অফার দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সহজ সরল লোকজনের কাছ শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতিদিন তারা লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত সংগ্রহ করতো। টাকা পরিশোধ করার পরও নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহ না করে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে সোমবার দুপুরে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে ওই অফিসে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক হেনা আক্তার ও তার স্বামী কামাল হোসেন সটকে পড়ে। এ সময় পালানোর প্রস্তুতি কালে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) বিপ্লব হোসেন, সহকারি ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম ও অফিস সহকারি মো: জামাল হোসেনকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় নগদ ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩০০ টাকা, ৫টি মুঠোফোন সেট ও প্রতিষ্ঠনটির মানি রিসিট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
ইউএনও আরো জানায়, আটককৃত ব্যক্তিরা তাদের কার্যক্রমের স্বপক্ষে সদোত্তর দিতে পারেনি। একটি ট্রেড লাইসেন্স ব্যতিত বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি তারা। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শক্রমে আটক ব্যক্তিদের নামে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রয়োাজীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।