আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ টিকে আছে মরহুম খলিলুর রহমান চৌধুরীর মতো তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কারণে, আর আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার কারণে।
তিনি বলেন, খলিলুর রহমান চৌধুরী রাঙ্গুনিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের কাছে অনুকরণীয় একটি নাম। তৃণমূলের শ্রমিক নেতা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা হয়ে উঠা এই ব্যক্তিকে কখনও কোনো লোভ-লালসা স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও তার বাড়িতে এখনো টিনের চালা রয়ে গেছে। দু:সময়ে এই বাড়িতেই আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশ হতো।
তথ্যমন্ত্রী আজ রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত খলিলুর রহমান চৌধুরীর শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা জহির আহাম্মদ চৌধুরী, স্বজন কুমার তালুকদার, মো. শাহজাহান সিকদার, আবুল কাশেম চিশতি, ইদ্রিছ আজগর, আবদুল মোনাফ সিকদার, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, আসলাম খাঁন, ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা আক্তার, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খায়রুল বশর মুন্সি প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাককালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে রাঙ্গুনিয়ার কোথাও আমাদেরকে সভা করতে দেয়া হতো না। শেষ পর্যন্ত সভা করতে হয়েছিল খলিলুর রহমান চৌধুরীর বাড়ির উঠোনে। সেই বাড়ির উঠোনের সভায়ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। হামলা করে আমাদের কর্মীদের গুরুতর আহত করা হয়েছিল। তীব্র প্রতিকুল পরিস্থিতিতে আমাদের রাজনীতি করতে হয়েছে। ”
তিনি বলেন, খলিলুর রহমান চৌধুরী এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি দলের গন্ডি পেরিয়ে রাঙ্গুনিয়ার আপামর জনগণের ভালবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি যখন ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তখন অন্যকোন দলের কেউ তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রার্থী হননি। সব দল এবং মতের মানুষের তার প্রতি এমনই শ্রদ্ধা ছিল।
নতুন প্রজন্মের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের খলিলুর রহমান চৌধুরীর জীবন থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘১৫ বছরের বেশি সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মতো গুরু দায়িত্ব পালনের পরও তার টিনের চালার বাড়িতে কোন পাকা ঘর নির্মাণ হয়নি। গত ১১ বছরে সারা বাংলাদেশে বহু ইমারত নির্মিত হয়েছে। তিনি চাইলে করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নাই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দু’দফায় মন্ত্রী পরিষদের দায়িত্বে আছি, আমার কাছে কখনো তিনি কোন ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য তদবির করেননি। এরকম নেতা সহজে পাওয়া যায়না। এরকম একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষকে আমরা হারিয়েছি। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে হারিয়েছি একজন মুরুব্বিকে।’
এর আগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিজের নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ার তিন শতাধিক দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে ঐচ্ছিক তহবিলের ১০ লাখ টাকা থেকে নগদ টাকা বিতরণ করেন।
তথ্যমন্ত্রী পরে উপজেলা ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ।