চিকিৎসা সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) একক কর্তৃত্ব আর থাকছে না। দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের জন্য চিকিৎসা সামগ্রী, বিশেষ করে বড় বড় যন্ত্রপাতি, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির ভ্যাকসিন এবং ওষুধপত্রসহ অধিকাংশ ক্রয় প্রক্রিয়া এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ে আসছে। করোনাভাইরাস মহামারির কেনাকাটাও তাদের মাধ্যমেই হচ্ছে। কিন্তু সিএমএসডির মাধ্যমে ৯০০ কোটি টাকার কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যাচাই-বাছাই করে ওই বিল পরিশোধের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্নিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে কেনাকাটার সার্বিক প্রক্রিয়া যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। যেসব সামগ্রী ক্রয়ে অস্বাভাবিক বিল করা হয়েছে, সেগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাচাই-বাছাইয়ের কাজ এখনও চলছে। এটি সম্পন্ন হলেই বিল পরিশোধসহ অন্যান্য বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। কেনাকাটায় কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের দুর্নীতিতে লাগাম টেনে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কার্যক্রম শুরু করেছে। এটি বাস্তবায়ন হলেই কেনাকাটায় সিএমএসডির একক কর্তৃত্ব খর্ব হবে।
স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরাও কেনাকাটায় এই একক কর্তৃত্ব খর্ব করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের অভিমত, কেনাকাটা নিয়ে স্বাস্থ্য খাতে যে দুর্বৃত্তায়নের ঘটনা ঘটেছে, তা বন্ধ করা জরুরি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে। এটি আরও আগে চিন্তা করলে স্বাস্থ্য খাতে এত অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটত না। প্রয়োজন নেই, এমন শত শত কোটি টাকার চিকিৎসা সামগ্রী কিনে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে ব্যাপক অপচয় হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে কেনাকাটার পরিবর্তে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটার সুযোগ পেলে দুর্বৃত্তায়ন অনেকাংশে বন্ধ হবে। ওই কেনাকাটা স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়েছে কিনা, তা দেখভালের জন্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ক্রয় প্রক্রিয়ার পাশাপাশি নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ যাবতীয় বিষয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। এতে করে তাৎক্ষণিকভাবে সবাই সবকিছু জানতে পারবে। পুরো প্রক্রিয়া সবার কাছে দৃশ্যমান হলে দুর্নীতিও বন্ধ হবে।
ক্ষমতা খর্বের নেপথ্যে দুর্নীতি : দেশে গত ৮ মার্চ করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। তার আগের মাসেই কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের মাধ্যমে পিপিই, মাস্ক, সার্জিক্যাল গাউন, হ্যান্ডওয়াশসহ বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় করে চীনে পাঠানো হয়। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই করোনা সংক্রান্ত ক্রয় প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ১০ মার্চ থেকে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় করে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালের পাঠানো শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। কেনাকাটা নিয়ে সিএমএসডি প্রথম হোঁচট খায় খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ করে। এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে করে ভুয়া মাস্ক সরবরাহ করার অভিযোগ করে ওই হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ। কিন্তু বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর। ডা. মঞ্জুর মোর্শেদকে প্রথমে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এবং পরে পাবনা মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বদলি করা হয়। ডা. মোর্শেদ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রয়াত সালাউদ্দিন ইউসুফের আত্মীয়। খুলনার ঘটনাটি চাপা দিতে পারলেও রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভুয়া এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। এক পর্যায়ে মুগদার পরিচালককেও ওএসডি করা হয়। এই দুই ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নকল মাস্ক সরবরাহকারীদের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। পরে করোনা সংক্রান্ত কেনাকাটা নিয়ে একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালকের পদ থেকে গত ২২ মে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহীদ উল্লাহকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর জনপ্রশাসন সচিবের কাছে লিখিত এক চিঠিতে তিনি কেনাকাটায় দুর্নীতির বিস্তারিত তুলে ধরেন। চিঠিতে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার কর্তৃপক্ষ নিজ থেকে কোনো সামগ্রী ক্রয় করেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সব ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পরিচালকের ওই বক্তব্যের সূত্র ধরে জানা যায়, করোনা সংক্রান্ত কেনাকাটার সব দায়িত্ব পালন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত একটি টাস্কফোর্স কমিটি। ১২ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটির আহ্বায়ক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এবং সদস্য সচিব এনটিপি কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম। মান যাচাইয়ের নামে ওই কমিটির পরামর্শেই প্রতিটি কেনাকাটা সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় পিপিই, মাস্কসহ প্রায় ৯০০ কোটি টাকার বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী কেনা হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ডা. নাসিমা সুলতানা কমিটির আহ্বায়ক হলেও কেনাকাটা নিয়ে তাকে পুরো অন্ধকারে রাখা হয়। ডা. সামিউল ইসলাম আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। সমকালে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়। এরপর এক প্রতিবাদলিপিতে কেনাকাটার দুর্নীতিতে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। সামিউল ইসলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিদায়ী মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে জানান, সিএমএসডিকেন্দ্রিক কেনাকাটা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নেপথ্যের নির্দেশনায় পুরো ৯০০ কোটি টাকার ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এক্ষেত্রে ডা. সামিউল ইসলামের ঠিক করে দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোই সিংহভাগ কাজ পায়। এতে করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেটটি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তবে মন্ত্রণালয়ের বিদায়ী শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে অধিদপ্তরের এই সিন্ডিকেটের সখ্য ছিল। তাদের মাধ্যমেই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। জানা যায়, ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যের দাম ৫ থেকে ১০ গুণ বাড়তি দেখানো হয়েছে। এক সেট এক্সামিনেশন হ্যান্ড গ্লাভসের দাম দেখানো হয়েছে ৩৬ টাকা। অথচ ৫০ জোড়া এ ধরনের গ্লাভসের বাজারমূল্য মাত্র ১৮০ টাকা। ১২০ থেকে ২৫০ টাকা মূল্যের রেইনকোট জাতীয় পণ্য কিনে পিপিই বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পিসিআর মেশিন কেনা হয়েছে পুরোনো ২০০৯ সালের মডেলের। ওই মেশিনের মান নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে দুটি হাসপাতালের পরিচালকও অভিযোগ করেন। একাধিক সূত্র বলছে, ৯০০ কোটি টাকা কেনাকাটার কথা বলা হলেও তার অর্ধেক পরিমাণ টাকার সামগ্রীও কেনা হয়নি। বাড়তি মূল্য দেখিয়ে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে পুরো টাকা লোপাট করা হয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বিল পরিশোধের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরই মূলত ওই বিল আটকে যায়। কেনাকাটার সঙ্গে জড়িত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রায় এক ডজন কর্মকর্তাকে এরই মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালে চিকিৎসা সামগ্রী কেনাকাটায় সিএমএসডি দুর্নীতির পাশাপাশি চরম অব্যবস্থাপনারও পরিচয় দিয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে আগে কখনও কোনো চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের নূ্যনতম অভিজ্ঞতাও নেই- এমন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই পুরো ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। অনভিজ্ঞ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্নিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের উচ্চ কমিশন বাণিজ্যের কারণে ক্রয় করা চিকিৎসা সামগ্রীর গুণগত মান সঠিক রাখা সম্ভব হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, টাস্কফোর্স কমিটির সঙ্গে কমিশন নিয়ে বনিবনা হলেই কেবল একজন ঠিকাদার তালিকাভুক্ত হতেন। প্রতিটি সামগ্রী সরবরাহের জন্য একজন ঠিকাদারকে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিশন দিতে হতো। এভাবে কেনাকাটার নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। ওই কেনাকাটার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন ঠিকাদারের নামে এরই মধ্যে মামলা হয়েছে। দুদকও অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
কেনাকাটা হবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছর সারাদেশের সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে শত শত কোটি টাকার প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ছোট-বড় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সিএমএসডির মাধ্যমে ক্রয় করা হয়ে থাকে। এসব যন্ত্রপাতি ক্রয়ে বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়ে আসছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, সংঘবদ্ধ বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রভাবশালীদের মাধ্যমে তদবির করে চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও কোটি কোটি টাকার ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয় করে। এমআরআই ও সিটি স্ক্যানের পাশাপাশি ক্যান্সার চিকিৎসায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য লিনিয়াক এক্সিলেটরের মতো মূল্যবান যন্ত্রপাতি ক্রয় করে ওইসব প্রতিষ্ঠানে গছিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার কর্তৃপক্ষ ইচ্ছামতো কেনাকাটা করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়ে তা গ্রহণ করতে চাপ প্রয়োগ করে। চাপের মুখে যন্ত্রপাতি গ্রহণ করলেও তা বছরে পর বছর বাক্সবন্দি হয়ে পড়ে আছে। কারণ ওইসব ভারী যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের নেই। সম্প্রতি স্বাস্থ্য খাত নিয়ে দুদকের পর্যবেক্ষণেও এই তথ্য উঠে এসেছে। এর ওপরে করোনা সংক্রান্ত ক্রয় প্রক্রিয়ায় সীমাহীন দুর্নীতি সরকারকে বিব্রত করে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে এরপরই কেনাকাটা বিকেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিদায়ী মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ পদত্যাগের প্রায় এক সপ্তাহ আগে সমকালকে বলেছিলেন, সিএমএসডির পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ ও যন্ত্রপাতি যাতে কিনতে পারে, সেজন্য নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। নীতিমালা চূড়ান্ত হলেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, কোন প্রতিষ্ঠানে কী সামগ্রীর প্রয়োজন, তা ওই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ভালো জানেন। অন্য একটি প্রতিষ্ঠান নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী সামগ্রী কিনে দিলে তা ওই প্রতিষ্ঠানের কাজে নাও লাগতে পারে। সুতরাং প্রতিটি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রয় প্রক্রিয়া করলে আর্থিক অপচয় ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সমকালকে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) চালু হওয়ার পর এর মাধ্যমেই সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়ে আসছে। ওই ওপির মাধ্যমে প্রতিটি কার্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধপত্র ক্রয় করা হতো। তবে করোনা সংক্রমণের পর ওপির মাধ্যমে কেনাকাটা না করে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার কর্তৃপক্ষের কাছে সব দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। সেখানে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং এখন চাইলে ওইসব ওপির মাধ্যমেও বিভিন্ন ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়। প্রয়োজন হলে বিষয়টি নিয়ে আরও চিন্তাভবনা করা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় আমরা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে চাই। নিয়ম মেনে যাচাই-বাছাই করে কেনাকাটা সম্পন্ন করা গেলে দুর্নীতি বন্ধ হবে। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান এবং ওপির মাধ্যমে ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে জবাবদিহিতাও বাড়বে। এভাবে মানসম্পন্ন সামগ্রীও ক্রয় করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।