করোনার কারণে ব্যাহত হচ্ছে শিশুদের টিকা দান কর্মসূচি। সংক্রমণের ভয়ে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের টিকা কেন্দ্রে না নেয়ায় গেলো তিন মাসে অনেক শিশুর টিকা দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেব মতে করোনার কারণে প্রায় ৪৮ শতাংশ শিশু সময়মত টিকা পায়নি। সময়মত টিকা না দিলে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হবে বলে আশংকা- বিশেষজ্ঞদের। তবে বাদপড়া শিশুদের টিকা দিতে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগ।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর টিকা কেন্দ্র। স্বাভাবিক সময়ে এখানে প্রতিদিন গড়ে দেড়শো’ শিশু টিকা নিতো, সেখানে এখন মাত্র ৪০ থেকে ৮০ জন শিশু টিকা নিচ্ছে।
একই চিত্র দেশের প্রায় সবগুলো টিকা কেন্দ্রের। অভিভাবকরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে টিকা কেন্দ্রে আসতে তারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না।
মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কে টিকা কেন্দ্রে আসা শিশুর সংখ্যা কমেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, ধনুষ্টংকার, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, পোলিও, যক্ষ্মা, হাম ও রুবেলা, হেপাটাইটিস-বি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ৮ ধরনের রোগ প্রতিরোধের জন্য শিশু জন্মের পর থেকে ১৫ মাসেরে মধ্যে ৬টি টিকা দেয়া হয়। চলতি বছর ৩৭ লাখেরও বেশি শিশুকে টিকা দেয়ার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে মার্চ মাস থেকে গেলো তিন মাস টিকাদান অস্বাভাবিক হারে কমে যায়।
বারডেম হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা বলেন, সময়মত টিকা না দিলে শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হবে।
স্বাস্থ্য বিভাগের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির পরিচালক শামসুল হক জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত টিকা মজুদ রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাদপড়া সব শিশুকে টিকা দেয়ার কাজ শেষ হবে। শিশুদের টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যেত অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
টিকা কর্মসূচির অবস্থা
টিকার আওতাধীন শিশু : প্রায় সাড়ে ৩৭ লাখ
করোনার আগে টিকার কভারেজ : ৯৪.২০ % (বিসিজি)
৯১.৩০ % (এমআর প্রথম ডোজ)
৯৬.৭০ % (এমআর দ্বিতীয় ডোজ)
করোনাকালীন টিকার কভারেজ : ৫২.০০ % (বিসিজি)
৫৪.৯০ % (এমআর প্রথম ডোজ)
৬০.২০ % (এমআর দ্বিতীয় ডোজ)
সূত্র: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর