ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
বলিউডের জনপ্রিয় নায়ক সাইফ আলী খানের ওপর হামলাকারির বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। জেলার নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামের রুহুল আমিন ফকিরের ছেলে মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ। তিন ভাই বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়।
এলাকায় সে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালাতো। দেশে তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। হত্যা মামলার পর সে এলাকায় ছেড়ে চলে যায়। এরপর পরিবারের কেউ তার আর কোন খোঁজ খবর রাখেনি। ভারতে আটকের পর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমগুলোতে আসা সংবাদ ও ছবি দেখে শেহজাদকে শনাক্ত করেছে তার পরিবার।
তার বাবা রুহুল আমিন ফকির নিখাদ খবরকে বলেন, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে অবৈধভাবে সে ভারতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে হোটেলে চাকরি করতো বলে শুনেছেন তিনি। সে কীভাবে ভারতে গেছে সেটা তাঁর জানা নেই।
শেহজাদের ছোট ভাই সালমান ফকির জানান, তার মেজো ভাই শেহজাদ ২০১৭ সালে রফিকুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকে লচালক হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে ভারতে পালিয়ে যান। এর আগে দেশে থাকা অবস্থায় ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হয়। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তার সঙ্গে পরিবারের আর কোন যোগাযোগ নেই।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায় , বাবার কর্মস্থল ছিল খুলনায়। সেই সুবাদে পরিবারের সঙ্গে খুলনায় থাকতো শেহজাদ।খুলনায় বসবাসরত অবস্থায় মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে সে। ওই সময় থেকেই অবৈধপথে তার ভারতে যাতায়াত ছিল। খুলনায় থাকাকালে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়। এতে বিরক্ত হয়ে তার পরিবার গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। তবে এলাকায় মাঝে-মধ্যে আসা-যাওয়া থাকলেও স্থায়ী ভাবে থাকতোনা।। ২০১৭ সালের পর থেকে তাকে আর এলাকায় দেখাও যায়নি। পরিবারের সঙ্গেও সে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
গত রবিবার (১৯ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী জানানো হয় সাইফ আলী খানের ওপর হামলাকারীকে অবশেষে আটক করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ।
মুম্বাই পুলিশ সুত্র অনুযায়ী , রবিবার সকালে মহারাষ্ট্রের ঠাণে এলাকার এক জঙ্গল থেকে তাকে ঘুমন্ত অবস্থা আটক করে। যা সাইফের বাড়ি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে।
এ সময় তার কাছ থেকে কাস্তে জাতীয় ধারাল অস্ত্র এবং একটি তোয়ালে পাওয়া গিয়েছে। আটক ব্যক্তি প্রথমে নিজের নাম বিজয় দাস বললেও পরে মহম্মদ শেহজাদ বলে দাবি করেন।
আটককৃত ওই ব্যক্তি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি।
নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, ২০১৭ সালে নলছিটির মোল্লারহাট স্টিল ব্রিজের কাছে ভাড়ায় মোটরসাইকেলের চালক রফিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় রাজাবাড়িয়া গ্রামের মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার পরে তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।এলাকায় থাকাকালে তিনি ছিনতাই, চুরি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি। তবে শেহজাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় এবং ঢাকায় হত্যা মামলা রয়েছে। সে ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ রয়েছে।