স্টাফ রিপোর্ট ঃ
দীর্ঘদিন সবকিছু বন্ধ রেখে একটা দেশ চলতে পারে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অন্য দেশগুলোও ধীরে ধীরে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্র ও যাতায়াত উন্মুক্ত করছে। কাজেই আমরাও সেই পদ্ধতিতে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জানি দীর্ঘদিন সবকিছু বন্ধ ছিল। কিন্তু এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, অন্য দেশগুলোও ধীরে ধীরে তাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্র, যাতায়াত উন্মুক্ত করছে। কাজেই আমরাও সেই পদ্ধতিতে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনীতির চাকাটা সচল রাখতে হবে। কারণ মানুষের উপার্জনের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা দিচ্ছি, সহযোগিতা করছি। কিন্তু তারপরেও বিশেষ করে সীমিত আয়ের লোকদের চলতে হচ্ছে। প্রত্যেকেরই কষ্ট করতে হচ্ছে। এ কষ্টের হাত থেকে সবাইকে আমরা মুক্তি দিতে চাই। এরই মধ্যে আপনারা জানেন আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি।’
‘যদিও বাজেটের ওপর আমাদের চাপ পড়বে। আগামী ১১ জুন আমরা বাজেট ঘোষণা দেবো। বাজেট প্রণয়নের কাজও আমরা সেরে ফেলেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা ভাইরাস চোখে দেখা যায় না। কিন্তু এর এমন একটা শক্তি সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে, বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে, অর্থনীতির চাকা স্থবির করে দিয়েছে। সেরকম একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে। যে কোনো অবস্থা মোকাবিলা করে আমাদের চলতে হবে।
সেখানে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা এটা যেমন প্রয়োজন। সেইসঙ্গে সঙ্গে আমাদের অর্থনীতির চাকাটাও যেন চলে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ, কারণ যেহেতু করোনা ভাইরাসের সমস্যাটা শুধু বাংলাদেশে না, এটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। আজকে সারাবিশ্বই কিন্তু এ ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে গেছে। শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, চলাচল সবকিছু স্থবির। এ অবস্থার মধ্যদিয়েই আমাদের চলতে হচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। শুধু আমাদের না, বিশ্বজুড়েই উন্নত দেশগুলো যে অবস্থার মধ্যে আছে, স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ সবাই একই অবস্থায় চলছে।
করোনা ভাইরাসের কারণে যেহেতু অর্থনীতিতে একটা বিরাট ধাক্কা আসছে দেখতে পাচ্ছি। তার মধ্যে দিয়ে আমাদের চলতে হবে, চলতে হচ্ছে। আমরা যেমন চেষ্টা করে যাচ্ছি সহযোগিতা করতে।’
সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু এবং সংক্রমণের হার কম মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছিলাম যে কারণে করোনা ভাইরাসে আমাদের দেশে মৃত্যুর হার এবং সংক্রমিত হওয়ার হার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।’
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু উন্মুক্ত হচ্ছি, সেখানে একটা আশঙ্কা থেকে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আমি বলবো, সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধিটা যথাযথভাবে মেনে চলেন, এটা শুধু নিজেকে সুরক্ষিত করা না, নিজের পরিবারকেও সুরক্ষিত করা, নিজের পাড়া প্রতিবেশি এবং সঙ্গী-সাথী সবাইকে সুরক্ষিত করা। আশা করি, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন, যেন করোনা আর খুব বেশি সংক্রমিত না হয়।’
‘একটা জিনিস সবাইকে অনুরোধ করবো। এর আগেও বার বার বলেছি, নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে হবে। সেই ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধিগুলো সবাইকে মানতে হবে।’
১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজে ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার এবং তার বাইরে কওমি মাদ্রাসা, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বিশেষ অর্থ সহায়তা এবং বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা সহযোগিতা ও ভাতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
ফলপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নেতৃত্বে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন। পরে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হতে ফেসবুক লাইভে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
এ সময় গণভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।