হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

রাজনীতি

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের এই দিনে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ইন্তেকাল করেন। করোনাভাইরাসের কথা মাথায় রেখে তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রায় এক মাস আগে গত ১৮ জুন এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের লক্ষ্যে দলের পক্ষ্য থেকে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। তবে গত ১২ জুলাই বিদিশার তত্ত¡াধানে এরশাদ ট্রাস্টের আয়োজনে প্রেসিডেন্ট পার্কে দিনব্যাপী কোরআন খতম, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়েছে। এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সারাদেশে জাতীয় পার্টির সকল কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, সকল দলীয় কার্যালয়ে কুরআন তেলাওয়াত, এরশাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল এবং এরশাদের কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করতে আলোচনা সভা। এ ছাড়াও রংপুরে এরশাদের কবর জিয়ারত করা হবে। সেখানে এরশাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। পার্টির কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল এবং এরশাদের স্মৃতি বিজড়িত বনানীর পার্টির চয়ারম্যানের কার্যালযে দিনব্যাপী কুরআন তেলাওয়াত এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

এরশাদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত চরিত্র। সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করলেও রাজনীতিতে তিনি যেমন সফল-আলোচিত চরিত্র, তেমনি সুবিধাবাদী, ভীতি আনপ্রেডিক্টেবল হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৩০ সালের পহেলা ফেব্রæয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি লাহোরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে দেশে ফেরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদেন। ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট ভারতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় তিনি মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান ও উপসেনা প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।
তিনি ১৯৮২ সালে এক রক্তপাতহীন সামরিক অভূত্থানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হন এবং টানা ৯ বছর দেশ শাসন করেন। ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রকামী মানুষের গণঅভ‚ত্থানে তিনি ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। পরে দুর্নীতির অভিযোগে তিনি টানা সাড়ে ৬ বছর কারাবোগ করেন। কারাগারে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় ১৯৯১ সালে ও ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫টি করে আসনে নির্বাচিত হন।
দেশের শাসনভার গ্রহণের পর রাজনৈতিক দল গঠন করেন। প্রথম বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় ফ্রন্ট, পরে ফ্রন্ট নাম পরিবর্তন করে জাতীয় পার্টি নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। যা পরবর্তীতে বেশ কিছু উপদলে বিভক্ত হয়ে নানাভাবে জাতীয় পার্টি নামেই রয়েছে। তবে, এরশাদের জাতীয় পার্টিই তাদের মূল দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
২০১৪ সালের পাতানো নির্বাচনের পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনেও তিনি এমপি হন এবং জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার সময় দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের অসামান্য অবদান রাখলেও বিতর্কিত রাজনৈতিক কৌশলের কারণে তাকে বার বার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *