জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশে

ঢাকা

নিখাদ বার্তাকক্ষ: দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট বৃহস্পতিবার ষষ্ঠ বছরে পা দিলেও একজন রোহিঙ্গাকেও এখনও তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালে এসব নির্যাতিত মানুষদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বকে একটি মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদেরকে মানবিক সহায়তা প্রদান এবং তারা যেসব এলাকায় বসবাস করে সেখানে পরিবেশ ও সামাজিক ভারসাম্যহীনতার বোঝা বাংলাদেশ বহন করছে।
যদি এই সংকট দ্রুত সমাধান না করা যায় তাহলে এ অঞ্চল ও এর বাইরে নিরাপত্তা সমস্যা তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশ সরকার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের আশায় দিন গুণছে। তারা বাংলাদেশে শিক্ষা, খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য সেবা পাচ্ছে।
তারা নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার পর রাখাইনে তাদের জীবিকার সুযোগ বাড়াতে দক্ষতা উন্নয়ন কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করছে।
রোহিঙ্গা সংকট কোনো দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়। এর উৎপত্তি ও সমাধান মিয়ানমারে। বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসরণ করে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছে।
দুর্ভাগ্যবশত, দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থায় মিয়ানমারের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে এখনও কোন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারেনি।
প্রত্যাবাসন শুরু করার ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে হতাশাজনক পরিস্থিতির কারণে, বাংলাদেশ তাদের প্রত্যাবাসনে সহায়তা করার জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছে। সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের স্বদেশভূমি রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ, টেকসই, স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে নিরাপদ ও অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা এবং রোহিঙ্গাদের জন্য মিয়ানমারের সমাজে সুষ্ঠু সম্প্রীতি স্থাপন ও প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা। তাদের উচিত রোহিঙ্গা সঙ্কটের সবাত্মক সমাধানের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো।
মিয়ানমারে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য অপরাধীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা তৈরির বিষয়টি সমর্থন করা দরকার।
জাতিসংঘ এবং অংশীদারদের অবশ্যই নিরাপত্তাসহ একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে বাস্তব পদক্ষেপ ও প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।
আসিয়ান এ বিষয়ে প্রধান ভূমিকা নিতে পারে। রাখাইন রাজ্যে আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক মহলের উপস্থিতি রোহিঙ্গা এবং মিয়ানমার সরকোরের মধ্যে আস্থার ঘাটতি কমাতে এবং সুষ্ঠু প্রত্যাবাসনের জন্য আত্মবিশ্বাস তৈরিতে সহায়তা করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *