বিশেষ প্রয়োজনে ভার্চ্যুয়াল আদালত পরিচালনার সুযোগ রেখে বিল পাস

জাতীয়

বিশেষ সময়ে প্রয়োজন অনুসারে ভার্চ্যুয়াল আদালত পরিচালনার সুযোগ রেখে সংসদে বিল পাস হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজ বুধবার বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন। এর শিরোনাম হচ্ছে, ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০’। পরে তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়।

এর আগে বেলা ১১টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

বিলের ওপর আলোচনায় এর নানা দুর্বলতা ও ক্ষতিকর দিক বিরোধীদলীয় সাংসদেরা তুলে ধরেন।

বিরোধীদলীয় একাধিক সদস্যের দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠ ভোটে নিষ্পত্তি করা হয়।

ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রেখে গত ৭ মে মন্ত্রিসভা এ-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়ার পর তার ভিত্তিতে ভার্চ্যুয়াল আদালতের কাজ এখন চলছে। এই ভার্চ্যুয়াল আদালতে শুধু জামিনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শুনানিই হচ্ছে। তবে অনভ্যস্ততা ও অপ্রতুল অবকাঠামোর কারণে ভার্চ্যুয়াল আদালত নিয়ে আইনজীবীদের অস্বস্তি রয়েছে।

অধ্যাদেশটি আইন হিসেবে জারি করতে গত ২৩ জুন সংসদে বিল তোলা হয়। তখন বিলটি পরীক্ষা করে ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ২৪ জুন সংসদীয় কমিটি বিলটি নিয়ে বৈঠক করে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। পরে ২৯ জুন সংসদীয় কমিটি বিল পরীক্ষা করে সংসদে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।

প্রস্তাবিত আইনের ৫ ধারায় বলা ছিল, ‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ সময়-সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।’ পরে সংসদীয় কমিটি ওই ধরায় পরিবর্তনের সুপারিশ করে। ‘সময়-সময়’ শব্দ দুটির আগে ‘প্রয়োজন অনুসারে’ শব্দ দুটি যোগ করা হয়।

বিলটি পাসের প্রক্রিয়ার সময় জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ অভিযোগ করেন, ‘ভার্চ্যুয়াল কোর্টের’ কারণে আইনজীবীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। এমনকি আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেবে। বিরোধী দলের সদস্যদের বিভিন্ন সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ আইন বিশেষ সময়ের জন্য। পূর্ণাঙ্গ ট্রায়াল এখনই করা সম্ভব হবে না। তার জন্য সাক্ষ্য আইন, ফৌজদারি ও দেওয়ানি কার্যবিধি সংশোধন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত ৫০ হাজার কারাবন্দীর জামিন হয়েছে। আর সেটা হয়েছে এই ভার্চ্যুয়াল কোর্টের জন্যই। আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এগিয়ে যাব আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়েই।’

মন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা হচ্ছে। মাস্ক পরা হচ্ছে। সে জন্য প্রয়োজন অনুসারে, যেখানে খুব দরকার, সেখানে প্রচলিত ব্যবস্থায় আদালত চালানো হবে। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, তিনি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রয়োজন হলে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। তিনি বলেছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সীমিত আকারে আদালত চালু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *