বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা: সোনার বাংলার রূপরেখা থেকে ডিজিটাল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা

প্রচ্ছদ বাংলাদেশ

নিখাদ বার্তাকক্ষ : পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো ২৫ জুন, ২০২২। শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরের প্রতিবেশী দেশগুলোর গণমাধ্যমেও দিনব্যাপী প্রকাশিত হয়েছে এই সেতু বাস্তবায়নের সংবাদ। এমনকি আন্তর্জাতিক বিশ্ব এবং সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও করা হচ্ছে উচ্চকিত প্রশংসা। কিন্তু এই পথ সহজ ছিল না। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর পদ্মা সেতুর নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু করা হয়। নদীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই শেষে মাওয়া ও জাজিরা দুই প্রান্তে সেতু নির্মাণের স্থান চূড়ান্ত করা হয়। ২০০১ সালে পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এরপর সরকার বদলের কারণে সেই কাজ আর এগুয় নাই। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আবারও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার ধারাবাহিকতাতেই আজ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ভূমি সরাসরি সড়ক পথে রাজধানীসহ পুরো বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত হলো। উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পথে ধাবমান এই সময়ে পদ্মা সেতু বাঙালি জাতির আত্মবিশ্বাসের পালে নতুন হাওয়া লাগিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ হয়েও, বাংলাদেশে যেভাবে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো একটি কঠিন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলো, তাতে চমকে গেছে পুরো বিশ্ব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য সাহস ও দূরদর্শিতার জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে বলে মেনে নিচ্ছে পাকিস্তানের মতো একটি রাষ্ট্রও। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের জীবন বদলের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এই সেতু নির্মাণ করতে বহুমুখী প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে। প্রথমত, বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা ও গভীর এই নদীর তলদেশ অনেক গভীর ও জটিল প্রকৃতির, মূলত ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মার মিলিত স্রোতকেই আমরা পদ্মা নদী বলি। জেনে রাখবেন, ব্রহ্মপুত্রও বিশ্বের অন্যতম প্রশস্ত নদী। তার সঙ্গে যখন পদ্মার খরস্রোত মিলিত হয়, তার স্রোতপ্রবাহ তখন আমাজানের চাইতেও অধিক হয়ে দাঁড়ায়। প্রথমত এতো প্রকৃতিক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে, বিশ্বের বুকে নান্দনিক স্থাপনার দ্বিতল-সেতু নির্মাণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। এই সেতু এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্তিশালী বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতির অদম্য মনোবলের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারকে একদিকে যেমন ভীষণ প্রাকৃতিক প্রতিকূল মোকাবিলা করতে হয়েছে; তেমনি অন্যদিকে সহ্য করতে হয়েছে রাজনৈতিক প্রকিবন্ধকতা। অহেতুক সমালোচনা, হতাশা ছড়ানো গুজব, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র সবকিছু মিলিয়ে এই সেতু নির্মাণের বিষয়টি একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের জন্য হয়ে উঠেছিল রাজনৈতিক কমিটমেন্টের বিষয়। সরকার প্রধান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বহুমুখী ষড়যন্ত মোকাবিলা করে জনগণের প্রতি সেই কমিটমেন্ট রক্ষা করেছেন। এ যেনো অদম্য পিতার অদম্য কন্যা। বাঙালি জাতির দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের জন্য বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, সাহস ও দূরদর্শিতার যেমন বাঙালি জাতির জন্য এক শিক্ষণীয় অধ্যায়, তেমনি দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার দর্শনও নতুন প্রজন্মের জন্য দৃষ্টান্ত।

গণমানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত অবকাঠামোগত উন্নয়ন- এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর অন্যতম দর্শন। বঙ্গবন্ধুর সেই মানবিক রাষ্ট্রদর্শনই বাস্তবায়ন করে চলেছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রতিটি বাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যাবতীয় উন্নয়নকর্ম ও দর্শন এখন গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম ও গণমানুষের মুখে মুখে ঘুরছে। তবে এরকম একটি নান্দনিক সময়ে, আসুন বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার ভিত্তিগুলো সম্পর্কেও একটু জেনে আসি। কারণ, আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া সেই ভিত্তিপ্রস্তরের ওপরেই আজকে ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়িয়ে আছি আমরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *