মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে প্রমত্তা পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি ঢুকে শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। গাইবান্ধার করতোয়ায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে লালমনিহাটের দক্ষিণ বালাপাড়া নামের একটি গ্রাম। এদিকে, কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি কমায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে বানভাসিদের দুর্ভোগ কমছে না। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য-
মুন্সীগঞ্জ : লৌহজংয়ে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ২৪ ঘণ্টায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড আরও জানায়, মাওয়ায় ১৩ সেন্টিমিটার বেড়ে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পদ্মা অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের জনপদগুলো প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। দ্রুত পানি আসার কারণে আমন ধানসহ বহু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পদ্মার পানিতে স্রোত ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। তাই শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
গাইবান্ধা : ব্রহ্মপুত্র ঘাঘট তিস্তায় পানি প্রতিদিনই কমছে কিন্তু দুই দিন ধরে করতোয়ায় অব্যাহতভাবে পানি বাড়ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ২৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘটের পানি ১৭ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচে ও তিস্তার পানি ২২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার নিচে চলে গেছে। অন্যদিকে করতোয়ার পানি ৬২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। লালমনিরহাট : আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামটি মানচিত্রে থাকলেও এখন আর দৃশ্যমান নেই। তিস্তা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে গ্রামটি। গতকাল দুপুরে গ্রামের শেষ বাড়িটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এক সপ্তাহের ভাঙনে শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় অসহায় পরিবারগুলো চরম বিপাকে পড়েছে। এখন নদীভাঙন পাশের চ-ীমারী গ্রামের ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে। একই অবস্থা জেলা সদরের খুনিয়াগাছ, রাজপুর, মোগলহাট, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সানিয়াজান, সিন্দুনা, সিঙ্গিমারী, ডাউয়াবাড়িসহ কালিগঞ্জের ভোটমারী ইউনিয়নে চলতি বন্যায় এসব এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কেউ কেউ সরিয়ে নিচ্ছে বসতবাটি।
কুড়িগ্রাম : তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য ছোট নদ-নদীর পানিও হ্রাস পেয়েছে। ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এ তথ্য নিশ্চিত করে। পানি দ্রুত কমছে এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে কমে বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে চিলমারী পয়েন্টে কমে ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে, পানি কমতে শুরু করায় এ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।