নিখাদ বার্তাকক্ষ : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বিএনপি মানুষের পাশে নেই, তারা শুধু বাগাড়ম্বরে আছে।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য, দেশ ও সমাজের সেবার জন্য। কিন্তু বন্যার মধ্যেও বিএনপি নেতারা ঢাকার নয়াপল্টন, প্রেসক্লাব ও দলীয় কার্যালয়ে বসে বসে শুধু বিবৃতি দেয়, বাগাড়ম্বর করে, দুর্গতদের পাশে নেই। এখন হয়তো আমাদের বক্তব্যের পর তারা কিছু ফটোসেশন করবে, কিন্তু সত্যিকার অর্থে মানুষের পাশে দাঁড়াবে না। অপরদিকে আমাদের নেতাকর্মীরা বন্যা শুরুর সাথে সাথে বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, মানুষের জন্য প্রাণ দিয়েছে।’
আজ সচিবালয়ে সাংবাদিকরা বন্যা নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আপনারা জানেন, বিএনপি নেতারা করোনাকালেও মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তখনও আমাদের দলের নেতাকর্মীরাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলো, ত্রাণ তৎপরতায় এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণে আমাদের দলের নেতাকর্মীরাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। সে কারণে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৮১ জন সদস্যের মধ্যে ৫ জন, উপদেষ্টামন্ডলীর অনেকে এবং সংসদ সদস্যও মারা গেছেন। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না, তারা করোনাকালে শুধু ফটোসেশন করেছে।’
যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ঘুম রাত কাটান উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আরো আট-দশদিন আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন যে, এবার দেশে বন্যা হতে পারে। তিনি আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ নন, তারপরও তার সাধারণ জ্ঞান থেকেই তিনি এটি বলেছিলেন এবং দেখা গেলো যে, একদিনে এক হাজার মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে প্রশাসনের সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন এবং আমাদের দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’
ড. হাছান বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের অনেকেরই নিজেদের ঘরবাড়ি বন্যায় ডুবে গেছে, এরপরও প্রশাসনের পাশাপাশি তারা বন্যার্তদের পাশে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা বিভিন্ন গণমাধ্যম, সামাজিকমাধ্যমে দেখেছেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও সেই রিপোর্ট করেছে যে পানি ঠেলে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে ছাত্রলীগের একজন নেতার মৃত্যু হয়েছে।’
পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপির নানা মন্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পদ্মা সেতু তো তাদের জন্য যন্ত্রণা। বিএনপি-জামাত এবং যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিলো তাদের জন্য তো একটি যন্ত্রণা-জ্বালার বিষয়। কারণ এই পদ্মাসেতু হোক তারা চায়নি। সুতরাং এই পদ্মাসেতু হয়ে যাওয়াতে জ্বালা আর উদ্বোধন হলে আরো বড় জ্বালা। তারা চায় না পদ্মা সেতু উদ্বোধন হোক। উদ্বোধন বানচাল করার জন্য তো তারা নানা ধরণের ষড়যন্ত্র করেছিলো, অনেক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা হয়েছে। সেই জ্বালা থেকেই তারা এইসব কথা বলে।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য কোনো উৎসব করছে না, জনসভা এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠান করছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে শুধু দু’পাড়ের মানুষের যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্যই বৃদ্ধি পাবে না, বন্যা মোকাবেলায়ও সহায়ক হবে। যেহেতু পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আজকে উল্লসিত এবং দেশের মানুষ একে শুধুমাত্র সেতু হিসেবে নেয়নি, এটি আমাদের জাতি সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সক্ষমতার প্রতীক। ২৫ জুন সেখানে একটি জনসভা আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।