কলিমুল্লাহ ও মনিরুলসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা

চট্টগ্রাম

নিখাদ বার্তাকক্ষ : কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৬০ কোটি টাকায় মনোনয়ন ক্রয় করেছেন, টকশোতে এমন বক্তব্য দেওয়ায় জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) সভাপতি নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, বিএনপি নেতা মনিরুল হক চৌধুরীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১ জুন) চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবিরের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন কুমিল্লা শহর যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ। মামলার অপর আসামি হলেন বিএনপি-জামায়াতের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় লন্ডন থেকে পরিচালিত ইউটিউব চ্যানেল টেবিল টক ইউকের সঞ্চালক হাসিনা আক্তার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫/২৯/৩১ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
তিনি বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ জুলাই।
আদালতে করা মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৩ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ডের সভার সিদ্ধান্তে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। আরফানুল হক রিফাতের দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিএনপি-জামায়াতের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় লন্ডন থেকে পরিচালিত ইউটিউব চ্যানেল টেবিল টক ইউকের মাধ্যমে গত ১৯ এপ্রিল একটি টক শো প্রচারিত হয়। টকশোতে মামলার বাদী এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত বিষোদগার এবং মিথ্যা বানোয়াট অপপ্রচার শুরু করে। এর মধ্যে ১ নং আসামি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ওই টকশোতে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের নমিনেশন এনসিউর করতে ১৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। পরে শুনলাম যে এটা বেড়ে ২০ কোটি টাকায় গেছে। পরে যে হইচইটা হলো এই টাকার পরিমাণটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে নাকি ৬০ কোটি টাকা। তারা টকশোতে মানহানীকর বক্তব্য দেন। এছাড়া টকশোতে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করে তিনি বাদীর সম্মানহানী করেছেন।
১ নং আসামি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লা কোনো ধরনের তথ্য প্রমাণ ছাড়া সামাজিক গণমাধ্যমে এ জাতীয় মিথ্যা, বানোয়াট, মানহানীকর বক্তব্য উপস্থাপন করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার নীলনকশায় জড়িত হয়েছেন। তার এ ধরনের বক্তব্যে আমার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, রাজনৈতিক সম্মানহানী ঘটানো হয়েছে। ওই বক্তব্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের অন্যান্য সদস্যদের সম্মানহানী করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের পারিবারিক ও রাজনৈতিক সম্মানহানী ঘটানো হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, একই টকশোতে ২ নং আসামি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. মনিরুল হক চৌধুরী পরিকল্পিতভাবে ১ নং আসামি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মিথ্যা বানোয়াট উক্তিকে সমর্থন করে বাদীর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের সম্মানহানী করেছেন। এছাড়া ৩ নং আসামি হাসিনা আক্তার ওই টকশো-তে ‘৬০ কোটি টাকা দিয়ে নমিনেশন ক্রয় করেছে গডফাদার রিফাত’ শিরোনামে সংবাদ সামাজিক গণমাধ্যমে প্রচার করে বাদী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সম্মানিত অন্যান্য সদস্যদের সম্মানহানী করেছেন।
আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহার করে ওই টকশো অনুষ্ঠানে মানহানীকর বক্তব্য প্রচার করে আসন্ন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার ঘৃণ্য চেষ্টায় লিপ্ত হয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *