নিম্ন আদালত থেকে হত্যা মামলার হুকুমের আসামি বাচ্চু বেপারীর জামিন

আইন ও আদালত সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি: শরীয়তপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালত থেকে হত্যা মামলার হুকুমের আসামি বাচ্চু বেপারীর জামিন লাভ। আদেশ পালন কারী অন্য আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায় শরীয়তপুর জেলা পালং থানাধীন পূর্বের শত্রুতার জের ধরে গত ১৪/১২/২০২১ ইং তারিখে বাদী মনোয়ারা বেগম এর ছেলে মেহেদী হাসান কে বেদম পিটিয়ে জখম করে ।

মারাত্মক আহত মেহেদী হাসান এর ভাই জাকির হোসেন বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় গত ১৬/১১/২০২১ ইং তারিখে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৮. তারিখ ১৬/১১/২০২১. ধারা ৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড।

এই মামলায় আসামি ৮ জন এছাড়া বিস্ফোরক দ্রব্যের আইনের ৩ মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত তারিখে বাদী জাকির হোসেন পালং মডেল থানা থেকে বের হলে উপজেলা অফিসের সামনে দুবাই প্লাজার পাশে কম্পিউটার দোকানে পৌঁছা মাত্র পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র সহ জাকির হোসেন এবং মনির হোসেন কোতোয়াল দুই ভাই গুলি করে মারাত্মক জখম করে।

মনির হোসেন কোতোয়াল চরম আক্রমণ করতে থাকলে ভাই জাকির হোসেন তাকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসলে বাচ্চুর হাতে থাকা রিভারবল দিয়ে মনির হোসেনকে গুলি চালায়। ভাগ্যবশত বাচ্চু বেপারীর চালানো গুলি জাকির হোসেনের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত করে ।

এতে জাকির হোসেন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং রক্তক্ষরণ হতে থাকে। আশেপাশের লোকজন এসে জাকির হোসেন এবং মনির হোসেন কোতোয়াল কে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুলিবিদ্ধ জাকির হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।

এই ব্যাপারে জাকির হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নং ২১ তারিখ ১৭/১১/২০২১. ধারা ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/১১৪পেনাল কোড রজু করা হয়। এই মামলায় আসামি ২১ জন। উভয় মামলায় আসামি বাচ্চু বেপারী।

জাকির হোসেন একজন স্বচ্ছ রাজনৈতিক কর্মী । ছাত্রজীবনে, শাহাবাগ থানা ছাত্রলীগের যুগ্ন- আহবায়ক ও আইন বিষয়ক সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের দায়িত্ব পালন করছিলেন। বর্তমানে জাকির হোসেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ২৪ ওয়ার্ড এর সদস্য।

তার জনপ্রিয়তার কারণে এলাকায় জাকির হোসেনের পরিবারের সুনাম রয়েছে। বিষয়টি ভালোভাবে নেননি শরীয়তপুরে মাদক সম্রাট ও ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাচ্চু বেপারী। মাদক ব্যবসা করে তিনি শরীয়তপুরের কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছে। এমন কোনো অপকর্ম নেই যা বাচ্চু বেপারী টালি খাতায় লিপিবদ্ধ হয়নি। টাকার জোরে সমস্ত অপকর্মে রাতারাতিই ধামাচাপা দেওয়ার তার মূল ব্যবসা। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, দখলবাজি নানা অপরাধের নায়ক বাচ্চু বেপারী।

দুর্নীতি দমন কমিশন সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে অবৈধ পন্থায় উপার্জিত অর্থের হিসাব চাওয়ার নোটিশ প্রদান করলে ও মোটা অংকের অর্থের বিনিময় ধামাচাপা দেওয়ার মুখরোচক গল্প রয়েছে। তার পুঁজি হচ্ছে চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসা। একজন সক্রিয় রাজনীতিবীদ ও আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেনকে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে মারাত্মক জখম করার পরেও পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাচ্চু বেপারী।

এর বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। যিনি এখনো মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জাকির হোসেনের মামলায় তার সহযোগীরা জেলহাজতে গেলেও বাচ্চু বেপারী কে এক ঘন্টার জন্য হাজতবাস করতে হয়ন। আদালত পাড়ায় মুখরোচক গল্প রয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা বিনিময় জামিন লাভ করে তাও আবার নিম্ন আদালত থেকে।

বিজ্ঞ আদালতের প্রতি সম্মান রেখে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। হুকুম দাতা এবং এক নম্বর আসামি বাচ্চু বেপারীকে জেলে পেরন করা যেতে পারেনি।২১ আসামির মধ্যে যাদের অবস্থান দশের পরে তাদের কৌশলে’ ৩ জন আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে । বাকীরা এখন মুক্ত। পুলিশ প্রশাসন বাচ্চু বেপারীর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ,যুবলীগ এর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তাদের প্রশ্ন যে ব্যক্তি হুকুম করলেন এবং গুলি করলে তাকে জামাই আদর করে আদালত জামিন দেয়। বিজ্ঞ আদালতের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করে শর্তে জানান অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়কে চাপ সৃষ্টি করে বাচ্চু বেপারীর জামিন আদায় । এই ব্যাপারে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সালেউজ্জামান টুটুল এর সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন আপনি একজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছেন, বলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *