খুনী আটক: বাল্যবিবাহের দিনে কনে ছুরিকাঘাত,পরে মৃত্যু

অপরাধ প্রচ্ছদ

নিউজ ডেস্ক : রংপুরের বদরগঞ্জে একটি বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠানে বিয়ে পড়ানোর আগেই হবু বাল্যবধু তারমিনা আক্তার ওরফে ফুলতিকে (১৪) ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামি শাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ২ আগস্ট দুপুরে পুলিশের যৌথ দল তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে খুনী শাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতার করে। ঘটনার পর থেকে খুনী শাখাওয়াত হোসেন দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ।

তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান। ফুলতি”র খুনী শাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতারের পর কালিয়াকৈর থেকে বদরগঞ্জ থানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে অভিযাত্রিক পুলিশ দলটি।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই নালিশি খুনের ঘটনাটি ঘটে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের সাজানো গ্রামে। মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়বালা এলাকার জনৈক মোনায়েম হোসেনের ছেলে খুনী শাখাওয়াতের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিয়ের দিন ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে ভোরে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নবম শ্রেণির মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ফুলতিকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত আহত করে পালিয়ে যায় উক্ত খুনী শাখাওয়াত হোসেন। এমতাবস্থায় বাড়ীর লোকজন ও স্থানীয়য দ্রুত ফুলতিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি করে। সেখানে পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে রোববার ১ আগস্ট ভোর ৬ টা ১০ মিনিটে ফুলতি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ময়নাতদন্ত শেষে ভিকটিম ফুলতি’র মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মাদ্রাসা শিক্ষার্থী কিশোরী ফুলতি’ লোহানীপাড়া দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। ভিকটিম ফুলতির বাবা বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের সাজানো গ্রামের জনৈক তোয়াব আলী ও মাতা পারভিন আক্তার। ভিকটিম ফুলতিকে ছুরিকাঘাতের পরের দিন ২৯ জুলাই খুনী শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ভিকটিমের মামা জনৈক নূর আলম বদরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। কিশোরী ফুলতি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করায় উক্ত মামলাটি আইনিভাবেই হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। ২৮ জুলাই ভোরে কিশোরী ফুলতিকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করেই উক্ত বখাটে সন্ত্রাসী ও খুনী শাখাওয়াত মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে পলাতক হয়।

আরো উল্লেখ্য যে, মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা এলাকার পশ্চিম বড়বালায় ভিকটিম ফুলতির বড় বোন তহমিনার বিয়ে হয়। সেই সুবাদে ফুলতির উক্ত মিঠাপুকুর উপজেলার বোনের বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু হয় এবং জনৈক মোনায়েম হোসেনের বখাটে লম্পট ও সন্ত্রাসী ছেলে শাখাওয়াত হোসেনের অপরিণামদর্শী কুদৃষ্টি পড়ে নাবালিকা ভিকটিম ফুলতির ওপর। বখাটে লম্পট শাখাওয়াত হোসেন প্রেমের প্রস্তাব দেয় নাবালিকা ফুলতিকে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম ফুলতির পরিবার ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তড়িঘড়ি করে বুধবার ২৮ জুলাই কিশোরী ফুলতিকে অন্যত্র বিয়ে ঠিক করে । বিষয়টি জানতে পেরে বখাটে লম্পট ও সন্ত্রাসী শাখাওয়াত ক্ষিপ্ত হয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে ভোরে ভিকটিম ফুলতির বাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত ফুলতিকে ডেকে দরজার কাছেই মারাত্মকভাবে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত এবং রক্তাক্ত যখম করে পালিয়ে যায ছুরিকাঘাতের সময় ফুলতি চিৎকার করতে করতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে ফুলতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জ্ঞান হারায় ভিকটিম। ছুরিকাঘাতে ফুলতির বুক, দুই উরু ও পাঁজর গুরুত্বর রক্তাক্ত যখম হয়। স্থানীয় প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলেও সন্ত্রাসী শাখাওয়াতকে ধরতে পারে নাই,কারণ লম্পট শাখাওয়াত দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।

জানা যায়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাদ্রাসা ছাত্রী ফুলতির জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় এবং তাতে ফুলতি বলেছে, ‘বুধবার ভোর ৫টার দিকে বখাটে লম্পট সাখাওয়াত যখন মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাড়িতে আসে তখন বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে ছিল। শাখাওয়াতের ডাকে ঘুম থেকে জেগে দরজা খুলে বের হলে এবং কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারাল ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করতে থাকে আমার বুক, দুই উরু ও পাঁজরে এবং আমি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে করতে অজ্ঞান হয়ে যাই‌। ঠিক কতক্ষণ আমাকে ছুরিকাঘাত করে সেইটা সঠিক বলতে পারবোনা। কারণ আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার পর থেকে আসামিকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। অবশেষে সোমবার পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সমন্বয়ে বদরগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় এবং তাতে ফুলতি বলেছে, ‘বুধবার ভোর ৫টার দিকে বখাটে লম্পট সাখাওয়াত যখন মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাড়িতে আসে তখন বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে ছিল। শাখাওয়াতের ডাকে ঘুম থেকে জেগে দরজা খুলে বের হলে এবং কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারাল ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করতে থাকে আমার বুক, দুই উরু ও পাঁজরে এবং আমি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে করতে অজ্ঞান হয়ে যাই‌। ঠিক কতক্ষণ আমাকে ছুরিকাঘাত করে সেইটা সঠিক বলতে পারবোনা। কারণ আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার পর থেকে আসামিকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। অবশেষে সোমবার পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সমন্বয়ে বদরগঞ্জ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *