অক্সিজেন সংকটে চিকিৎসকসহ ৮ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক সাস্থ্য ও চিকিৎসা

নিখাদ ডেক্স : ভারতের রাজধানী দিল্লির বাত্রা হাসপাতালে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার পর একজন চিকিৎসকসহ আট জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে হাসপাতালটির অক্সিজেন ফুরিয়ে যায়, অক্সিজেন সরবরাহ আসতে আসতে প্রায় দেড়টা বেজে যায়; অক্সিজেনবিহীন এই পৌনে দুই ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই একে একে আট জনের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালটি জানিয়েছে।

এই নিয়ে হাসপাতালটিতে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটল। এর আগে ২৪ এপ্রিলও এখানে অক্সিজেনের যোগান ফুরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেবার মারাত্মক কিছু ঘটার আগেই অক্সিজেন সরবরাহ এসে পৌঁছেছিল।
যে আট রোগীর মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ছয় জন হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন, অপর দুই জন ওয়ার্ডে ছিলেন। যে চিকিৎসক মারা গেছেন তিনি হাসপাতালটির গ্যাস্ট্রোএন্ট্রেরোলজি ইউনিটের প্রধান ছিলেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

নগরীর অক্সিজেন সংকট নিয়ে টানা ১১ দিন ধরে দিল্লি হাই কোর্টে শুনানি চলছে। শুনানিতে বাত্রা হাসপাতালের কর্মকর্তারা আদালতকে বলেছেন, অক্সিজেন নিয়ে ট্যাঙ্কার প্রায় দেড়টার দিকে পৌঁছেছে।
এ সময় পর্যন্ত প্রায় ২৩০ জন সঙ্কটাপন্ন রোগী অক্সিজেন ছাড়া ছিলেন।
“১১টা ৪৫ মিনিটে আমাদের অক্সিজেন ফুরিয়ে যায় আর সরবরাহ আসে দেড়টা বাজে। আমরা এক ঘণ্টা ২০ মিনিট ধরে অক্সিজেনহীন অবস্থায় ছিলাম,” আদালতকে বলে হাসপাতাল।

এর প্রতিক্রিয়ায় আদালত বলে, “আশা করি কোন প্রাণহানি ঘটেনি।”
এর উত্তরে হাসপাতালের প্রতিনিধি বলেন, “প্রাণহানি ঘটেছে। আট জন মারা গেছেন। আমাদের একজন চিকিৎসকেও হারিয়েছি আমরা।”

তীব্র অক্সিজেন সংকটের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা দিল্লির হাসপাতালগুলোর মধ্যে বাত্রা একটি। অক্সিজেন সংকটের কারণে এসব হাসপাতালের হাজার হাজার রোগী জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

গত সপ্তাহে নগরীটির জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে অক্সিজেন ঘাটতির কারণে ২৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।

করোনাভাইরাস মহামারীর ধ্বংসাত্মক দ্বিতীয় ঢেউয়ে খাবি খাচ্ছে ভারত। শনিবার সকালের আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গিয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড করেছে। একই সময় আরও ৩৫২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

প্রতিদিন লাখ লাখ রোগী শনাক্ত হতে থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্মীদের প্রাণান্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে, অতিরিক্ত চাপে চিকিৎসকরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালগুলো শয্যা, ওষুধ ও অক্সিজেনের মতো জরুরি সামগ্রীর অভাবের কারণে অনেক রোগীদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *