সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ছয়টি ইউনিটের রেজিমেন্টাল কালার প্রদান

জাতীয় প্রচ্ছদ

সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ. এসবিপি, বিএসপি, বিজিবিএম, পিবিজিএম, বিজিবিএমএস, পিএসসি, জি কর্তৃক ৬টি ইউনিটকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান করেন আজ বুধবার চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

বর্হিশত্রু হাত থেকে এই সোনার বাংলাকে সহ বাংলাদেশের জনগণকে ও প্রানপ্রিয় মাতূভূমিকে রক্ষা করার ব্রত নিয়েছে সেই সূর্যসন্তানরা এবং ঐ সূর্য সন্তানরা সারা বিশ্বে সুনাম অর্জন করে “বাংলা মাকে” গর্বিত করেছে। সেই গর্বিত বাংলা মায়ের সন্তানের নাম *বাংলাদেশ সেনাবাহিনী* । উক্ত গর্বিত সন্তানদের এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে *বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর* ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ছয়টি ইউনিটের রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কারিত করেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ মহোদয়।

আজ ২রা সেপ্টেম্বর সকালে সেনাবাহিনীর ছয়টি সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন ১৮, ২০, ২১, ২২ ও ২৩ বীর কালার প্যারেডে অংশ নেয় এবং প্রধান অতিথি মহোদয়ের কাছ থেকে রেজিমেন্টাল পতাকা গ্রহণ করে।

ঐ সময় সশস্ত্রবাহিনী ও সেনাবাহিনী প্রধান মহোদয় সবাইকে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সহমর্মিতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রেখে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সৃশৃঙ্খল, দক্ষ ও যোগ্য সেনা সদস্য হিসেবে গড়ে ওঠার বিশেষ আহ্বান জানান।

উক্ত অনুষ্ঠান শেষে সশস্ত্রবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ মহোদয়কে গণমাধ্যমের ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট এবং অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা প্রায় অর্ধশতাধিক প্রাসঙ্গিক, অপ্রাসঙ্গিক এবং অযৌক্তিক প্রশ্ন করতে থাকেন।
কিন্তু বাংলার সূর্য সন্তানদের প্রধান অর্থাৎ সেনাপ্রধান মহোদয় উনার চিরাচরিত নিয়মে সুশ্রী-শান্তভাবে ও ধীরে ধীরে সাংবাদিকদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেন।

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ মহোদয় প্রথমেই ইষ্পাত-কঠিন ভাবে বলেছেন আমার বিশ্বাস ও প্রত্যাশা সাবেক সেনা কর্মকর্তা নিহত মেজর সিনহা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হবেই ইনশাআল্লাহ।

বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর আর কাউকে যেন শহীদ মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের ভাগ্য বরণ করতে না হয়, সেজন্য তার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রত্যাশা করেছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ মহোদয়।

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যারা ক্রিমিনাল তাদের উপযুক্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে এই বাংলায়, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা সশস্ত্রবাহিনীর সার্ভিং অথবা রিটায়ার্ড কারও সাথে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আমি সেটা বিশ্বাস ও প্রত্যাশা করি।” এবং পাশাপাশি কোন মায়ের কোল যেন শহীদ মেজর সিনহার মায়ের কোলের মত শূন্য না হয় এটাই আমার কাম্য।

ঘটনার তদন্তে সন্তুষ্ট কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ মহোদয় বিনয়ের সাথে বলেন, “ঘটনাটি তদন্ত হচ্ছে, এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না।

“যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা বাংলার সবাই জানেন । অত্যন্ত জঘন্যতম ও পৌশাচিক একটা ঘটনা ঘটেছে এবং সেটার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতেই হবে ইনশাআল্লাহ ।এটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে এবং সাজাটা যখন হবে তখনই সন্তুষ্টির প্রশ্ন আসবে। তার আগে সন্তুষ্টি হয় কীভাবে, সন্তুষ্টি বলার সুযোগ নেই?

ভিন্ন আরো কিছু প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান মহোদয় বলেন, “আমরা যুগ যুগ ধরে দেখে আসছি, কোনো ঘটনা ঘটলে কেউ না কেউ এটার আনডিউ প্রিভিলেজ নিতে চায়। এবারও অনেকে চেষ্টা করেছিল। হয়ত এখনও চেষ্টা করছে। এ ধরনের ঘটনা চলতেই থাকবে। তবে সচেতন মানুষ এগুলো বোঝে। যে ঘটনা ঘটেছে অবশ্যই অত্যন্ত নৃশংস ঘটনা, ন্যক্কারজনক ঘটনা।

সাংবাদকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জেনারেল আজিজ আহমেদ মহোদয় আরো বলেন, “শুধু সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেই ঘৃণা জানানো হয়নি, পুলিশ প্রধানও সেদিন এসেছিলেন। তারাও সে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। সকলেই এ ঘটনার জন্য মর্মাহত হয়েছেন। এরকম একটা ঘটনাকে নিয়ে কেউ যদি অন্য কিছু করার চেষ্টা করে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা, সেটা কাঙ্ক্ষিত নয়।” র্যাব প্রধান ও ঘটনাস্থলে আসেন।

সশস্ত্রবাহিনীর কোনো সদস্যের ‘অস্বাভাবিক’ কিছু ঘটলে বিভাগীয় তদন্ত হয় জানিয়ে সশস্ত্রবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ মহোদয় বলেন, “সেটা আমাদের ডিপার্টমেন্টাল প্রয়োজন। আমরাও সে ধরনের একটা তদন্তের নির্দেশ সাথে সাথে দিয়েছিলাম, তদন্ত হচ্ছে।”

মিডিয়া কর্মীদের অন্য প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ““এ ব্যাপারে সশস্ত্রবাহিনীর পক্ষ থেকে সরকারকে কোনো সুপারিশ দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। কারণ এ ঘটনার পরপর সরকারের পক্ষ থেকে একটি যৌথ তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এ তদন্ত টিমের প্রতি সশস্ত্রবাহিনীর এবং আমি নিশ্চিত পুলিশ বাহিনীর প্রধানের ও সমর্থন রয়েছে।

“এ তদন্ত দল সরকারকে যেটা সত্যি সঠিক ও উপযুক্ত মনে করবে তারা সুপারিশগুলো করবে। এখানে সশস্ত্রবাহিনীর পক্ষ থেকে সুপারিশ করার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ এখানে একটা যৌথ টিম গঠন করা হয়েছে এবং সেখানে আমাদের সশস্ত্রবাহিনী বা সেনাবাহিনীরও সদস্য আছে। সুতরাং আলাদাভাবে সুপারিশ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।”


উল্লেখ্য ,মেজর সিনহা হত্যা ঘটনায় গত ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সিনহা নিহতের ঘটনা তদন্ত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে ওই কমিটির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *