সংক্রমণের তোয়াক্কা না করে ঈদে বাড়ি ফিরছে মানুষ

জীবন-যাপন বাংলাদেশ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশে কোরবানির ঈদে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষকে ভ্রমণ করার আহ্বান জানানো হলেও সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছে অধিকাংশ মানুষ।
ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রেলপথের যাত্রীদের পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা গেছে । রেল কর্তৃপক্ষও এটি নিশ্চিত করতে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করেছে।
সড়কপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে অধিকাংশ জায়গাতেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না মানুষ। কিছু কিছু গণ-পরিবহণে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রী নেয়া হলেও অধিকাংশই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে সবচেয়ে আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি দেখা গেছে নৌপথে যাতায়াতে। ঢাকার সদরঘাট থেকে অন্যান্য জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া প্রায় সবকটি লঞ্চেই ছিল ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী। যেভাবে গাদাগাদি করে যাত্রী নিয়ে লঞ্চ, স্টিমারগুলো ভ্রমণ করছে, ঐ পরিস্থিতিতে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো সুযোগই নেই।
ড়কপথে কিছু কিছু জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াতের খবর পাওয়া গেলেও নৌপথের ছিল সম্পূর্ণ বেহাল দশা।
ড়কপথে কিছু কিছু জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াতের খবর পাওয়া গেলেও নৌপথের ছিল সম্পূর্ণ বেহাল দশা।
জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সুপারিশ করেছিল যেন ঈদের সময় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম জেলার সাথে দেশের অন্যান্য জেলার যাতায়াত বন্ধ থাকে।
এই চারটি শহরে কোভিড রোগীর তুলনামূলক-ভাবে বেশি থাকায় ঈদের সময়ে এসব জায়গা থেকে মানুষের মাধ্যমে সারাদেশে যেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, সেলক্ষ্যে ঐ সুপারিশ করেছিল জাতীয় কমিটি। তবে শেষপর্যন্ত সুপারিশ আমলে নেয়া হয়নি, ফলে ঝুঁকি থাকলেও এসব জেলা থেকে অবাধে নিজেদের গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে মানুষ।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির গত বছর রোজার ঈদের আগে এক গবেষণায় বলা হয়েছিল যে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের চারটি সিটি কর্পোরেশনের প্রায় দেড় কোটি মানুষ ঐ ঈদে অন্য জেলায় সফর করবেন।
ট্রেনে যাত্রার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে পদক্ষেপ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
এবছর করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ঐ সংখ্যাটা সেই তুলনায় বেশ কম হবে বলে ধারণা করা হলেও যেই পরিমাণ মানুষ কর্মস্থল ছেড়ে বাড়ির দিকে যাবেন, সেই সংখ্যাটাও অনেক।
সাভার, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ এলাকার হাইওয়ে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায় অনেক বাসেই সরকার নির্দেশিত ভাবে এক সিট ফাঁকা রেখে নেয়া হচ্ছে না যাত্রী।
এছাড়া সিএনজি, লেগুনা, মাইক্রোবাসে ভ্রমণ করা মানুষের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করেন হাইওয়ে পুলিশ সাভারের একজন কর্মকর্তা।
ফেরিগুলোতে গাদাগাদি করে উঠতে দেখা গেছে মানুষকে।
আবার সিলেট, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রাজশাহীর দিকে যাত্রা করা যাত্রীবাহী বাসগুলোর অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন করছে বলে মন্তব্য করেন সেসব এলাকার হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা।
তবে সড়কপথে কিছু কিছু জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াতের খবর পাওয়া গেলেও নৌপথের ছিল সম্পূর্ণ বেহাল দশা।
শুধু ঈধে যাতায়াতই নয়, কিছুদিন আগে ঈদের কেনাকাটা করার সময়ও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করতে দেখা যায়নি।
শুধু ঈধে যাতায়াতই নয়, কিছুদিন আগে ঈদের কেনাকাটা করার সময়ও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করতে দেখা যায়নি মানুষকে (ঢাকার একটি মার্কেটের সামনের চিত্র)

গতকাল থেকে ঢাকা থেকে বরিশাল, চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে যেসব লঞ্চ, স্টিমার ছেড়ে গেছে, সেগুলোর প্রায় সবগুলোতেই গাদাগাদি করে গিয়েছে মানুষ।
পাশাপাশি ঢাকা থেকে সড়কপথে বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার সময় ব্যবহৃত ফেরিগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই ঠাসাঠাসি করে যাত্রী উঠতে দেখা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *