বেলাবো(নরসিংদী) প্রতিনিধি >
গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বেলাবো উপজেলার আখচাষিরা। একদিকে আখ কেটে সংগ্রহ করা হচ্ছে, অন্যদিকে কেটে আনা আখ থেকে রস সংগ্রহ করে সেই রস জাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে গুড়।
বিশেষ করে উপজেলার বাজনাব, পাটুলী, বিন্নাবাইদ ইউনিয়নে মাটির বিশেষ গুনাবলির ফলে এখানে আখের চাষে লাভজনক হচ্ছে বলে হদজানিয়েছে স্থানীয় কৃষকরা।
চলতি বছর নরসিংদীর বেলাবোতে আখ চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদিত আখের গুড় দিয়ে বিভিন্ন রকম পিঠা ও মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরী করা যায়। যা খেতে খুবই সুস্বাদু। এখানকার গুড় নির্ভেজাল ও খাটি হওয়ায় খুবই চাহিদা রয়েছে স্থানীয় বাজারে।
আখ চাষে খরচ কম এবং লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আখের ফলন ভালো হয়েছে।
কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা আখ চাষের দিকেই ঝুকছে। একটি জমিতে একবার আখ চাষ করলে ২-৩ বছর আখ উৎপাদন করা যায়। যার ফলে অধিক লাভের সম্ভাবনা থাকে কৃষকদের।
সরকারী প্রণোদনা পেলে আরো ব্যাপক ভাবে আখের গুড় উৎপাদন বাড়াতে পারে এমনটাই আশা করেন প্রান্তিক চাষীরা।
চাষীরা জানায়, প্রতি বিঘা জমিতে আখচাষে খরচ হয় মাত্র ২০-২২ হাজার টাকা। উৎপাদন ব্যয় মিটিয়ে প্রতি বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত আখের গুড় বিক্রি করে লাভ হয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা।
স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি আখের গুড় খুচরা বিক্রি করা যায় ১৪০-১৬০টাকা। এখানকার উৎপাদিত গুড় কোনো কেমিক্যাল ছাড়া প্রস্তুত হয়।
উপজেলা বাজনাব গ্রামের আখ চাষি মোঃ আবুল কাসেম বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর ধরে তিনি আখ চাষ করে গুড় উৎপাদন করছেন। এ বছর আবহাওয়া ভালো হওয়ায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। আশা করি লাভ ও ভালো হবে।
আখ চাষি বিল্লাল হোসেন জানান,তিনি এ বছর ৮০ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। গুড় উৎপাদনে অনেক
পরিশ্রম করতে হয় এবং উৎপাদিত গুড় বিক্রি করে সংসার চালানোও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি সরকারের
কাছে কৃষি সরঞ্জাম ও অন্যান্য সহায়তার দাবি জানান, যা হলে আখ চাষি ও গুড় উৎপাদনকারীরা ভালোভাবে
তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
আলী হোসেন বলেন, এখানকার গুড় নির্ভেজাল ও খাঁটি হওয়ায় স্থানীয় বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চাষে খরচ কম ও তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আখের ফলনও ভালো হয়েছে। এই গুড়ের স্থানীয় বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
বেলাবো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মুহিবুর রহমান সিদ্দিকি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বেলাবোতে ৬৫ হেক্টর জমিতে আখ আবাদ করা হয়েছে। প্রান্তিক কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা হিসেবে বীজ, সার, কীটনাশক ও পরার্মশ দিয়ে থাকি। তবে গুড় উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের জন্য কোনো প্রণোদনার ব্যবস্থা নেই।