সাতক্ষীরার খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে একাধিক গ্রাম প্লাবিত

সারাদেশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটি গ্রামসহ একাধিক গ্রাম বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গেছে। খর¯্রােতা খোলপেটুয়া নদীর দূর্গাবাটিতে ৪০ফুটের বেশী ভাঙনে দূর্গাবাটি, আড়পাঙাশিয়া, পোড়াকাটলার মাছের ঘের, ফসলী জমি প্লাবিত ঘরবাড়িতে ঢুকছে বেড়িবাঁধ ভাঙা জোয়ারের প্রবল পানির ¯্রােত।
এছাড়া জোয়ারের পানির চাপে সাতক্ষীরার কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধের একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে আরও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন উপকুলের মানুষ।
বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার দিকে সেখানকার প্রায় ২শ ফুট জায়গাজুড়ে বাঁধ খাটাভাবে নদীতে ধসে পড়ে। রাতের জোয়ারে প্লাবিত হয় গ্রামটি। স্থানীয়দের দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ শ্যামনগরের ৫নং পোল্ডারের উক্ত অংশের বাঁধ দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ন অবস্থায় ছিল। তবে শুক্রবার সকাল থেকে বাশ পাইলিং দিয়ে মাটি ফেলে রিং বাঁধ নির্মানের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ভাঙন কবলিত অংশের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য নীলকান্ত রপ্তান জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে হঠাৎ বিকট শব্দে সাইক্লোন শেল্টারের পুর্বপ্রান্তের উপকূল রক্ষা বাঁধের ৬০/৭০ ফুট জায়গা খোলপেটুয়া নদীতে ধ্বসে পড়ে। রাতে স্থানীয়রা ভাঙনের বিস্তৃতি ঠেকানোর কাজ শুরু করে।
নিলুৎপল মন্ডল নামের স্থানীয় এক গ্রামবাসী জানান, ভাঙনের খবর পেয়ে সকালে তারা ঘটনাস্থলে পৌছেছে রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। পরবর্তী জোয়ারের আগে ভাঙন কবলিত অংশে রিং বাঁধ দিতে না পারলে জোয়ারের পানি পশ্চিম ও পুর্ব দুর্গাবাটিসহ ভামিয়া, পোড়াকাটলা, চুনা ও হেঞ্চি গ্রামগুলোকে প্লাবিত করতে পারে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দুর্গাবাটির বিভিন্ন অংশে কোটি কোটি টাকার কাজ করা হলেও ভাঙনকৃত অংশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাটির কোনো কাজ করা হয়নি। এছাড়া প্রভাবশালীরা পাশের নদী হতে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করায় চর দেবে গেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেউ তদারকি করেননি।
বুুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম জানান, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটি গ্রামসহ একাধিক গ্রাম বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গেছে। খর¯্রােতা খোলপেটুয়া নদীর দূর্গাবাটিতে ৪০ ফুটের বেশী ভাঙনে দূর্গাবাটি, আড়পাঙাশিয়া, পোড়াকাটলার মাছের ঘের, ফসলী জমি প্লাবিত ঘরবাড়িতে ঢুকছে বেড়িবাঁধ ভাঙা জোয়ারের প্রবল পানির ¯্রােত। এছাড়া বহু জায়গায় বাঁধ দেবে গেছে। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি মেরামত করা না গেলে আসছে জোয়ারে আরও অন্যান্য ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করেছে। তবে দুপুরের জোয়ারে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। জোয়ার নামতে নামতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় কাজ করা কঠিন হবে। তিনি অভিযোগ করেন পাশের খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধভাবে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করায় চর দেবে যেয়ে পাশর্^বর্তী অংশের বাঁধে ভাঙন লেগেছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে বাঁধ খাটাভাবে নদীতে ধসে পড়ে। রাতের জোয়ারে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটি গ্রামসহ একাধিক গ্রাম বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গেছে। খর¯্রােতা খোলপেটুয়া নদীর দূর্গাবাটিতে ৪০ ফুটের বেশী ভাঙনে দূর্গাবাটি, আড়পাঙাশিয়া, পোড়াকাটলার মাছের ঘের, ফসলী জমি প্লাবিত ঘরবাড়িতে ঢুকছে বেড়িবাঁধ ভাঙা জোয়ারের প্রবল পানির ¯্রােত। ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ পরিদর্শন করেছি। তাৎক্ষণিক বালুর বস্তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
## আসাদুজ্জামান সরদার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *