সংগ্রাম ও অর্জনে আওয়ামী লীগের ৭৩ বছর

প্রচ্ছদ

লেখক:: আব্দুর রহমান
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে বাঙালি যে রাষ্ট্র পেল তা প্রত্যাশিত পাকিস্তান ছিল না। দুঃশাসন, কোটারি, জুলুম-অত্যাচার, আঞ্চলিক বৈষম্য, জাতিগত নিপীড়ন প্রথমেই জনগণের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলল। এ যেন এক শকুনের হাত থেকে অন্য শকুনের হাতে পড়ার মতো। পাকিস্তানের এই স্বাধীনতাকে শেখ মুজিবুর রহমান ‘ফাঁকির স্বাধীনতা’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

১৯৪৭ সালে দুটি আলাদা ভূখ, ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন খাদ্যাভ্যাস ও ভিন্ন মানবিক বোধবুদ্ধি নিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র চার মাস ২০ দিনের মাথায় বয়সে তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠন করেন সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠন পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগে দুটি ধারা বিদ্যমান ছিল। এর একটি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের অনুসারী গণতান্ত্রিক ভাবধারার গণমানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততায় বিশ্বাসী এবং অপরটি খাজা নাজিমুদ্দিনের নেতৃত্বে ড্রইংরুমকেন্দ্রিক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের অনুসারী কর্মী শিবিরকেন্দ্রিক অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী অংশটি পরবর্তীতে আওয়ামী মুসলিম লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

সেই অনুযায়ী ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার স্বামীবাগে কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে (হুমায়ুন সাহেবের বাড়ি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে গঠন করা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি ও টাঙ্গাইলের শামসুল হককে সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। কারাবন্দি তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনটির নাম রাখা হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। এর সভাপতি হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ১৯৫৫ সালে দলটি ধর্মনিরপেক্ষতাকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে। ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলের নামকরণ হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।
‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন আওয়ামী লীগের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে অন্যান্য দলকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করতে আওয়ামী মুসলিম লীগ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল ও নেজামে ইসলামের সঙ্গে মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়।

১৯৫২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এর পরের বছর ঢাকার ‘মুকুল’ প্রেক্ষাগৃহে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সম্মেলনে তাঁকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ১৩ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন শেখ মুজিব। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ ছিল তৎকালীন পাকিস্তানে প্রথম বিরোধী দল।

৬৪-এর দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছয় দফা দাবি পেশ করেন। ছয় দফা দাবির মূল উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান হবে একটি যৌথ রাষ্ট্র এবং ছয় দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে এই যৌথ রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ওই ছয় দফা মূলত বাঙালির মুক্তির সনদ। ছয় দফার আন্দোলনকে ভিত্তি করে জাতি স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধিকার ও স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার পথে উজ্জীবিত হয় এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়।

‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এ দেশের মানুষকে সংগঠিত করে আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়। এভাবে ২২ বছরের ধারাবাহিক রাজনৈতিক লড়াইয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৭১ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই জাতি মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। ৯ মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ বীর শহীদের রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের সল্ফ্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় লাল-সবুজ পতাকার বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতা এনে দেওয়া দলটির ইতিহাস তাই বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। সময়ের পরিক্রমায় আওয়ামী লীগ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- নাম দুটি এক ও অভিন্ন হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় অর্জন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান।

সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে আওয়ামী লীগ ১৯৫৪ সালে (যুক্তফ্রন্ট) এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার হিসেবে ক্ষমতায় আসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাে র মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের স্মরণীয় অধ্যায়ের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে পোরা হয় এবং তাঁদের ওপর নৃশংস নির্যাতন চালানো হয়। তারপর দীর্ঘ ২১ বছর সামরিক-বেসামরিক অপশাসনের কবলে পড়ে বাংলাদেশ পুনরায় পাকিস্তানি ভাবাদর্শে পেছনের দিকে যেতে থাকে। সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দীর্ঘদিন পথ হাঁটে বাংলাদেশ। এ সময় স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদরদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার রোধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ নামে কালো আইন পাস করা হয়। সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে রাষ্ট্রের চার মূল ভিত্তি- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে রাষ্ট্র সরে আসে। মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনা অসাম্প্রদায়িকতা থেকে সরে এসে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম যুক্ত করা হয়।

এরপর ১৯৮১ সালে এক চরম সংকটময় পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে তিনি একই সঙ্গে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার কার্য শুরু করে, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন এবং ভারতের সঙ্গে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী সীমান্ত সমস্যা সমাধান করে আওয়ামী লীগ সফলতার পরিচয় দেয়।

২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আরেক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় আওয়ামী লীগ। পরবর্তী সময়ে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা তিন মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। ২০০৪ সালে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার এক ভয়াবহ তৎপরতা চালানো হয়, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সে যাত্রায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা।

২০০৮ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব বিজয়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগের এই সরকারের আমলে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের বিচার সম্পন্ন হয়। আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্র বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশের ভৌগোলিক সীমানা বৃদ্ধি, ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে দেশের সীমানা বৃদ্ধি পায় এবং ছিটমহলবাসীর অনেক দিনের নাগরিকত্বের পরিচয়হীন মানবেতর জীবনযাপনের অবসান হয়। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ, নারী উন্নয়ন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর রোধ, মাথাপিছু আয় ডলারে উন্নীত, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মানুষকে বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করাসহ অসংখ্য মানবিক উদ্যোগ আওয়ামী লীগের এই সময়ের সরকারের বড় অর্জন। করোনা পরিস্থিতিতে পৃথিবীব্যাপী যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, তখনও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেই পরিস্থিতিকে অত্যন্ত দূরদর্শিতা ও সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা সরকারের সুবিবেচনার বিষয়টি তুলে ধরে। বর্তমানে বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উনয়ন জনসাধারণের জীবনকে গতিশীল করেছে এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রেখেছে। আওয়ামী লীগের এই সরকারের আমলে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে যানজট নিরসনকল্পে মেট্রোরেল নির্মাণ ও এক্সপ্রেস হাইওয়ে যুগান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সারাদেশে মহাসড়কগুলো চার লেন ও ছয় লেনে রূপান্তর করার মধ্য দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন সূচিত হতে চলেছে। কৃষিতে ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে কৃষকদের স্বল্প দামে সার ও বীজের জোগান দেওয়া এবং নানাভাবে কৃষিকে উৎসাহিত করার ফলে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে ব্যাপকভাবে সফলতা লাভ করেছে। বর্তমানে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এবং এর যথাযথ প্রয়োগের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে- এই বিশ্বাসের আঙ্গিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশ বিনির্মাণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে এবং দূরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

আর মাত্র এক দিন পর আমাদের প্রিয় নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করবেন। এই পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক, এই পদ্মা সেতু আমাদের আত্মমর্যাদার প্রতীক। কিছুদিন আগেও এ দেশের মানুষ ভাবতে পারেনি, পদ্মা সেতুর মতো এত বড় একটি মেগা প্রকল্প কোনো রকম বিদেশি অর্থায়ন ছাড়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এ দেশের অর্থনীতিবিদরা এ দেশের বিভিন্ন সংগঠনের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর স্বপ্নকে একটি অলীক ও বিলাসী ভাবনা বলে কটাক্ষ করেছিলেন। কিন্তু আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জানতেন তিনি কী করতে পারেন। তিনি স্বপ্ন দেখতে পারেন, স্বপ্ন দেখাতে পারেন। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তাঁর মেধা, দক্ষতা, সততা ও আন্তরিকতা নিয়ে তিনি এই বাংলার মানুষের জন্য নিজেকে নিবেদন করেছেন। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য, এই বাংলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য সব ষড়যন্ত্র ও বাধাবিঘ্ন মোকাবিলা করে, প্রতিমুহূর্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই দেশের জন্য, এই বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতির পিতার আদর্শ এবং আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মী ও সমর্থকের ভালোবাসাই শেখ হাসিনার মূল শক্তি। তাঁর সততা, দক্ষতা এবং সুযোগ্য নেতৃত্বে চার দফায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে আজ বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে দাঁড় করিয়েছেন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *