বিদেশে বসে কলকাঠি নাড়ছেন ঠিকাদার মিঠু

অপরাধ জাতীয়

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

অলিখিতভাবে অ্যাকাউন্টস ও দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করেন ভাতিজি নওশীন

বিদেশে বসে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সরকারি মালামাল ক্রয়ের কলকাঠি নাড়ছেন স্বাস্থ্য খাতের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের যে কোনো নিয়োগ এবং দরপত্র আহ্বান সবকিছু নির্ধারিত হয় মিঠু ও তার সিন্ডিকেটের ইচ্ছায়।

অভিযোগ রয়েছে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের স্টেনো-কাম পিএ পদে বসে অলিখিতভাবে অ্যাকাউন্টস ও টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন মিঠুর আপন ভাতিজি নওশীন। মিঠুর ঠিকাদারি সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতেই তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়োগ দেয়া হয়।

এর আগে হাসপাতালে পরিচালকের পিএস ছিলেন জেএমবির গুলিতে আহত বাহাই সম্প্রদায়ের নেতা রুহুল আমীন। তাকে বদলি করে নওশীনকে ওই পদে নিয়ে আসেন তার চাচা মিঠু।

এদিকে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেডসহ রোগ নির্ণয়ের জন্য যেসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে তা করেছে মিঠুর প্রতিষ্ঠান। হাসপাতালের এমআরআই মেশিন, এসি, এক্সরে মেশিন, আইসিইউ থেকে শুরু করে সিসিটিভি স্থাপন সব কাজ করেছে আলোচিত মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখন সেসব মেশিনের কোনোটাই আর সচল নেই। অভিযোগ রয়েছে, সব মালামাল জার্মানি বা এ মাপের অন্য দেশ থেকে আমদানির কথা ছিল, কিন্তু সেগুলো সবই চীনের যন্ত্রাংশ। তবে এসব মেশিনে জার্মানি, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানের সিল মেরে সরবরাহ করা হয়েছে। শুধু টেন্ডার বাগিয়ে নিুমানের মালামাল সাপ্লাই নয়, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাপাতালের যে কোনো নিয়োগ ও ঠিকাদারি কাজ হয় তা নির্ধারিত হয় মিঠু সিন্ডিকেটের ইচ্ছায়।

বেশ কয়েকজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, মিঠুর এসব অবৈধ কাজে বাধা দেয়ায় মেডিকেল কলেজের কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা আব্রাহাম লিংকন ওই সিন্ডিকেট চক্রের হাতে খুন হয়েছেন। শুধু তাই নয় তার ঠিকাদারি কাজের পথ মসৃণ করতে ধাপ এলাকায় যেসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তাতেও মিঠুর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বলেন, মিঠুর অনুপস্থিতিতে তার আপন বড় ভাই নুরুল হকের মেয়ে হাসপাতালের কর্মচারী উম্মে সুলতানা নওশীন এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এ সিন্ডিকেটের দেখভাল করছেন। নওশীন হাসপাতাল পরিচালকের পিএ ও নিজে হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস অফিসার ও টেন্ডার কমিটির প্রধান।

অভিযোগের ব্যাপারে উম্মে সুলতানা নওশীন বলেন, এসব বিষয়ের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। রংপুর মেডিকেলের পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম বলেন, মিঠু নামে আসলে আমি কাউকে চিনি না। আমি এখানে নতুন তাই চিনি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *