নিখাদ ডেক্স : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রক্তভেজা বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে এসে পিতৃহীন সন্তানের মতো আওয়ামী লীগকে মায়ের স্নেহেই চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে গেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।’
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে ঈদ-উত্তর মতবিনিময় সভায় ১৭ মে শেখ হাসিনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মন্ত্রী একথা বলেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বরাত বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিনে একটি সুখবর দিতে চাই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী জানান, করোনা মহামারির মধ্যে প্রায় সবদেশে যেখানে অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে, মাথাপিছু আয় কমেছে, সেখানে গত বছর বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আমাদের ২০১৯-২০ অর্থবছরের মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলার এখন প্রায় ৯ শতাংশ প্রায় বৃদ্ধি পেয়ে ২২২৭ ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা আমাদের জাতির জন্য আরেকটি অর্জন।
আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯১তম বাংলাদেশ আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে পৃথিবীতে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, উল্লেখ করেন ড. হাছান।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার ও রায় কার্যকর হয়েছে, যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়েছে ও চলমান আছে। তার হাত ধরেই ক্যান্টনমেন্টে বন্দি গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছিল, দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বারবার মৃত্যুর উপত্যকা থেকে ফিরে এসে জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনো বিচলিত হননি, দ্বিধান্বিত হননি, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’
‘ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লংঘন ‘ওয়াচ’ করে না হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’
ফিলিস্তিনি জনতার ওপর অব্যাহত ইসরায়েলি বোমা হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিরব কেন -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি ফিলিস্তিনে যখন ইসরায়েল কর্তৃক মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নারী, শিশু এবং সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, তখন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো নিশ্চুপ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এতো কিছু ওয়াচ করে আর এখন পৃথিবীর সমস্ত টেলিভিশন যে এই বর্বরতা দেখাচ্ছে সেটা তাদের চোখে পড়ে নাই, কোনো বিবৃতিও তাদের নাই, বলেন হাছান মাহমুদ ।
তিনি বলেন, ‘পান থেকে চুন খসলেই অ্যামনেস্টি ইন্টারনেশনাল বিবৃতি দেয়, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে, শহীদুল হকের পক্ষেও বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু আজকে যখন ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে তখন অ্যামনেস্টি ইন্টারনেশনালের কোনো অফিসিয়াল বিবৃতি আমরা দেখতে পাইনি। তাদের মিডিল-ইস্ট এবং নর্থ আফ্রিকার অঞ্চলের একজন উপপরিচালক একটি বার্তা সংস্থার সাথে আলাপকালে কিছু কথা বলেছেন, কিন্তু তাদের অফিসিয়াল কোনো বিবৃতি নাই।
এ ধরণের অপরাধের সময় যারা নিশ্চুপ থাকে এবং দেখতে পায় না, তাদের আসলে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে বিবৃতি দেয়ার নৈতিক অধিকার থাকে কি না, এটি একটি বড় প্রশ্ন মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে’ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব তো প্রতিদিনই এই সমস্ত কথা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উপস্থাপন করেন। তার এই বক্তব্য সেটিই ধারাবাহিকতা ছাড়া আর অন্য কোনো কিছু নয়।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনী জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার জন্যই কাজ করছে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, বিএনপি এবং তার মিত্ররা, তাদের পেট্রোলবোমা বাহিনী, সন্ত্রাসীরাই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা মির্জা ফখরুল সাহেব মানতে পারছেন না বলেই হয়তো তিনি একথা বলেছেন।