রাজধানীর শ্যামপুরে সহকর্মীদের দেওয়া পেট্রোলের আগুনে দগ্ধ যুবক রিয়াদ হোসেন (২০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান। বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া।
এর আগে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয় রিয়াদকে। তার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
ওই দিন সকালে শ্যামপুরের সালাউদ্দিন ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী এই রিয়াদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তার সহকর্মীরা। দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। মজা করার ছলে একজন আরেক জনকে ক্ষেপাতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানায়।
এ বিষয়ে শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় তিন জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। তিন জনকেই গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
রিয়াদের বাবা ফরিদ হোসেন জানান, রিয়াদ সিদ্ধেশ্বরী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন সালাউদ্দিন ফিলিং স্টেশনে কাজ করে। তার সহকর্মীরা তাকে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তবে কী কারণে তারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছু জানতে পারেননি।
শ্যামপুর থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব জানান, এ ঘটনায় গ্রেফতার তিন জন হচ্ছে– মাহমুদ হাসান ইমন (২২), মো. ফরহাদ আহামেদ পাভেল (২৮) ও শহিদুল ইসলাম রনি (১৮)।
ঘটনার বর্ণনায় পুলিশের এই এসআই বলেন, ‘ইমন ঘুমিয়ে ছিল। পাভেল ও রনি মিলে রিয়াদকে দিয়ে ইমনকে ঘুম থেকে জাগানোর কথা বলে। রিয়াদ তাকে ডাকলে সে ঘুম থেকে উঠবে না বলে জানায়। তারা আবার রিয়াদকে দিয়ে জোর করে এক মগ (২৫০ গ্রাম) অকটেন তার শরীরের ঢেলে দেয়। পরে ইমন ঘুম থেকে উঠলে, পাভেল আর রনি রিয়াদের কথা বলে। ইমন রেগে গিয়ে রিয়াদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে দেয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তারাই আবার আগুন নিভিয়ে, হাসপাতালে নিয়ে যায়।’