ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য চট্টগ্রাম উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে ৬ পুলিশসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করার অভিযোগে মামলাকারী নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
চট্টগ্রাম জেলাস্থ দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এ দুদক আইনের ২৮ (গ) ধারায় নুরুল আবছারকে আসামী করে মামলাটি করা হয়েছে বলে সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক ও মামলার বাদী নুরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। আসামী নুরুল আবছার পতেঙ্গা থানার কোনার দোকান এলাকার বদিউল আলমের ছেলে।
মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটি থেকে নুরুল আবছারকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হয়।
গত ২৫ মার্চ মহানগর দায়রা জজ আদালতে নালিশি মামলাটি করেন নুরুল আবছার। ৩০ লাখ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযুক্তরা হলেন পতেঙ্গা থানার সাবেক ওসি আবুল কাসেম ভূঁইয়া, এসআই তরুণ কান্তি শর্মা, প্রণয় প্রকাশ, আবদুল মোমিন, এএসআই মো. কামরুজ্জামান, মিহির কান্তি, সোর্স মো. ইলিয়াছ, মো. জসিম ও নুরুল হুদা।
মামলার আরজিতে নুরুল আবছার অভিযোগ করেন, ২০১৮ সালের ১ জুন তাকে পতেঙ্গা থানায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁকে থানায় আটকে রেখে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয় এবং টাকা না দিলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। নুরুল আবছার বাধ্য হয়ে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে মধ্যস্ততার মাধ্যমে ছাড়া পায়। এই বিপুল টাকা আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এসআই আবদুল মোমিন ও এএসআই কামরুজ্জামানের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু আরও ১৫ লাখ টাকা না দেওয়ায় তিন দিন দুই রাত নুরুল আবছারকে থানায় আটকে রাখা হয়। এরপর ৪০ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার দেখিয়ে তাঁকে মাদক মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। দুই মাস পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
তবে আদালতের আদেশে অভিযোগটি তদন্ত করতে নেমে ঘটনার সত্যতা পায়নি দুদক। অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক সাজানো ঘটনা উল্লেখ করে গত ৩০ জানুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক। গত ২৫ মার্চ চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ শেখ আশফাকুর রহমান।
এ প্রেক্ষিতে মিথ্যা মামলায় করায় অভিযোগকারী নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এর ২৮ (গ) ধারায় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
ওই অপরাধের জন্য নুরুল আবছারের নূন্যতম দুই বছর থেকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।