জাতিসংঘ আজ বিশ্বজুড়ে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করছে। অথচ প্রায় পাঁচ দশক আগে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে একই আদলে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই উন্নয়ন-ধারা থমকে যায়। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ আবার সেই স্বপ্নের পথেই হাঁটছে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরে এলেন জাতির পিতা। এমন ভূমিতে ফিরলেন বঙ্গবন্ধু, যেখানে পাকিস্তানিদের ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন। শোষণ-বঞ্চনায় দেশের আশি শতাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট। বিশ্ববাজারে তেল রাজনীতির কারণে মূল্যস্ফীতি তুঙ্গে।
এমন পরিস্থিতিতে শক্তহাতে হাল ধরেন জাতির পিতা। সব মানুষকে সম্পৃক্ত করে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সম্পদের সুসম বন্টনের উদ্যোগ নিলেন তিনি। সমবায়, কৃষি ও সাম্যের ভিত্তিতে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেন।
অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ জানান, কোটি মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়েছে, আমাদের কৃষি ভেঙ্গে পড়েছে, শিল্প ভেঙ্গে পড়েছিল, তারপর অর্থনৈতিক অন্যান্য কর্মকাণ্ড সবগুলোই ভেঙ্গে পড়েছিল। এভাবে যুদ্ধের পরে যা হয়। সেখান থেকে টেনে তোলা সেটা খুব কঠিন কাজ ছিল কিন্তু উনি শুরু করেছেন। শুরু করেছিলেন এবং দ্রুত আমরা দেখলাম যে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি হতে শুরু করেছে।
সব সংকট কাটিয়ে দেশ যখন স্থিতিশীলতার পথে ঠিক তখনই ঘাতকরা স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুকে। সাথে সাথে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্নও উল্টো পথে যাত্রা শুরু করে।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ জানান, এমন এক জায়গায় গিয়েছিল যখন মানুষকে কেন্দ্র যে উন্নতির কথা, মানুষকে কেন্দ্র করে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, যার আগে মানুষ স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিল বঙ্গবন্ধুর ডাকে। সবাইকে একত্র করে সেখান থেকে আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে এগিয়ে গিয়েছিলাম।
দীর্ঘ সামরিক শাসনের পর মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসলে আবার ফিরে আসে বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন ভাবনা।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, টেকসই উন্নয়ন ভাবনা জাতিসংঘ গ্রহণ করেছিল ১৯৭১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। সেখানে বলা আছে কাউকে বাদ দেয়া যাবে, সেখানে বলা আছে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করেই এগিয়ে যেতে হবে এবং প্রত্যেককে তার ন্যায্য অধিকার দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু তখনই সেটা বলেছিলেন যে, সবাইকে মন্ত্রণা থেকে মুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে এগিয়ে যাওয়ার।
বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশের দ্বারপ্রান্তে। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে এই উন্নয়ন অভিযাত্রা অনেক আগেই সম্পন্ন হতো।