নিখাদ বার্তাকক্ষ : দেশের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন, দেশের সব দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণসহ বাজিতপুর, ইশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাংগা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছা দেওয়ানি আদালতসমূহের ভোট কেন্দ্রে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিকাল ৫টা পর্যন্ত একযোগে চলবে এ ভোট গ্রহণ। এবারের নির্বাচনে ৫০ হাজার ৮০৩ জন আইনজীবী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। নির্বাচনে সাধারণ সাতটি আসনে ৩৫ জন প্রার্থী এবং গ্রুপ ভিত্তিক সাত আসনে ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদন্দ্বিতা করছেন।
বার কাউন্সিলের নির্বাচন ১৪ টি সদস্য পদে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৭ টি সাধারণ আসন। ৭ টি সাধারণ আসনে সারাদেশের আইনজীবীরা ভোট দিয়ে থাকেন। ৭টি আঞ্চলিক আসন বা গ্রুপ আসন। এখানে অঞ্চল ভিত্তিক আইনজীবীরা একজনকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে থাকেন।
বার কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের মধ্য থেকে সাধারণ আসনে সাতজন এবং গ্রুপ আসনে সাতজন সদস্য নির্বাচিত হবেন।
সারাদেশের আইনজীবীগণ সরাসরি সাধারণ আসনে সাতজন সদস্য নির্বাচিত করবেন। দেশের ৭টি গ্রুপ আসন থেকে সাতজন নির্বাচিত হবেন।
এর মধ্যে ‘এ’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) ঢাকা জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘বি’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘সি’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) চট্রগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘ডি’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) কুমিল্লা ও সিলেট জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘ই’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি, ‘এফ’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি এবং ‘জি’ গ্রুপে বৃহত্তর (পূর্ববর্তী) দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার অন্তর্গত সব স্থানীয় আইনজীবী সমিতি অন্তর্ভুক্ত।
গেজেট অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল হয় ৬ এপ্রিল পর্যন্ত, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয় ১৩ এপ্রিল এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২০ এপ্রিল।
বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন স্বাক্ষরিত নির্বাচন সংক্রান্ত গেজেটে
উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো প্রার্থী নির্বাচনের বিরুদ্ধে আপত্তি করতে চাইলে ফলাফল সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের দিন থেকে এক মাসের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এ জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন সংক্রান্ত আপত্তি দরখাস্ত শুনানির জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র এডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন এডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী ও এডভোকেট আব্দুস সবুর। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কার্যালয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ১৪ জুলাই আপত্তিপত্র গ্রহণ করবে।
করোনা মহামারি জনিত পরিস্থিতির কারণে বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে না পারায় বর্তমানে একটি এ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব পালন করছে। এই কমিটি ৩০ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী ১ জুলাই নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিগত নির্বাচন গুলোতে দেখা গেছে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের ‘সাদা প্যানেল’ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য সমর্থিত ‘নীল প্যানেল’ নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতা করেছেন। তাছাড়াও স্বতন্ত্র অনেক আইনজীবী নির্বাচনে প্রতিদন্দ্বিতা করেন।
সাদা প্যানেলের সাধারণ আসনের প্রার্থীরা হলেন-প্রবীণ আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান, মো. কামরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বাদল, শাহ মো. খসরুজ্জামান, মো. রবিউল আলম (বুদু), মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ (রাজা) ও মো. নজরুল ইসলাম খান। অন্যদিকে নীল প্যানেলের সাধারণ আসনের প্রার্থীরা হলেন- সাবেক এটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, এডভোকেট মুহাম্মদ জসীম উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী আবদুল মতিন।
সর্বশেষ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সংখ্যাগরিষ্টতা লাভ করে। সিনিয়র এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।