পাখ-পাখালি দেশের রত্ন, আসুন করি সবাই যত্ন’—এই স্লোগানে আগামী ৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পাখি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে ২১তম বারের মতো বসছে এই মেলা।
মেলার আহ্বায়ক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর মেলার আয়োজন করা হয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির গুরুত্ব অপরিসীম। এর সৌন্দর্য যেমন মানুষকে মুগ্ধ করে, তেমনই মানব জাতির অনেক উপকার করে।
তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে মেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। সবার জন্য মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে।
এবারের মেলায় অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে থাকবে পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপের মাধ্যমে পাখি পর্যবেক্ষণ, পাখির আলোকচিত্র ও পত্র-পত্রিকা প্রদর্শনী এবং পাখিবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা, যা সবার জন্য উন্মুক্ত।
এ ছাড়া মেলায় সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবদান রাখার জন্য ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’, নতুন প্রজাতির পাখির ছবি ধারণ ও চিহ্নিত করার জন্য ‘বিগ বার্ড অ্যাওয়ার্ড’ এবং পাখির ওপর সায়েন্টিফিক জার্নাল ও প্রকাশিত প্রবন্ধ পর্যালোচনা করে ‘সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হবে। এ বছর বাছাই প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, হিমালয়ের উত্তরাঞ্চল থেকে জাবি ক্যাম্পাসে আসে অসংখ্য অতিথি পাখি। সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট সংলগ্ন লেক, নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের ভেতরের লেকসহ সুইমিংপুল সংলগ্ন লেকে আশ্রয় নেয় তারা। বড়-ছোট সড়ালি, গার্গেনি, পিচার্ড, মানিকজোড়, মুরগ্যাধি, জলপিপি, নাকতা, কলাই, ফ্লাইপেচার, পাতারি, চিতা টুপি, লাল গুরগুটি, নাকতা হাঁস, খুনতে হাঁস, জিরিয়া হাঁস, ভুতি হাঁস, লেঞ্জা হাঁস, আফ্রিকান কম্বডাকসহ নানা প্রজাতির পাখি দেখা যায়।
জাবি’র প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তথ্য মতে, ১৯৮৬ সাল থেকে এখানকার জলাশয়গুলোতে অতিথি পাখি আসছে। এখন পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ২০৪ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে ক্যাম্পাসে। এর মধ্যে দেশি প্রজাতি রয়েছে ১২৬টি ও বিদেশি ৭৮টি। জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ২০০১ সাল থেকে পাখি মেলার আয়োজন করে আসছে।