নিউজ ডেস্ক : সকালে গ্রেপ্তার, বিকেলে জামিন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নারদ মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং বিধায়ক মদন মিত্র ও কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় আজ সোমবার বিকেলে জামিন পেয়েছেন। চারজনেরই অন্তবর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে বিশেষ সিবিআই আদালত। কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এই মামলার শুনানি চলে।
রাজ্যে বেড়ে চলা কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করা হয়। আদালতে গ্রেপ্তারকৃতদের পক্ষে জামিনের শুনানি করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায় শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিন আদালতে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, নারদকাণ্ডে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির বিধায়ক মুকুল রায়কে কেন গ্রেপ্তার করা হলো না? তিনি গ্রেপ্তার চারজনের জামিনের আবেদন করেন।
এই জামিন আবেদনের বিরোধীতা করে সিবিআই। সিবিআই পক্ষের আইনজীবী গ্রেপ্তারকৃতদের জেল হেফাজতে রাখার আর্জি জানান। সিবিআই পক্ষের আইনজীবী যুক্তি দেখান, আসামিরা বাইরে বেরিয়ে প্রমাণ নষ্ট করে দিতে পারেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের আইনজীবীরা পাল্টা যুক্তি দেখান, ফিরহাদ হাকিম কলকাতা পুরসভার পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান। সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তাঁকে প্রয়োজন।
অন্য দিকে ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশন নিয়েই প্রশ্ন তোলেন শোভনের আইনজীবী। আদালতে অভিযোগপত্রও জমা দেয় সিবিআই। বিধানসভার স্পিকারের অনুমতি ছাড়া মন্ত্রী এবং জনপ্রতিনিধিদের কীভাবে গ্রেপ্তার করা হলো, আদালতে সেই প্রশ্নও তোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
গ্রেপ্তারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিবিআই যা করেছে, পেছনের দরজা দিয়ে করেছে। কোভিড পরিস্থিতিতে গ্রেপ্তার নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথাও তুলে ধরা হয় আদালতে।
আজ সোমবার সকালেই নারদকাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয় রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। সেইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে। এই তিনজনের সঙ্গে তালিকায় ছিলেন সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও।
সিবিআই সূত্রে খবর, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নিজাম প্যালেসে অ্যারেস্ট মেমোয় সই করানো হয় তাঁদের সবাইকে। গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চলে যান নিজাম প্যালেসে। ওই চারজনের গ্রেপ্তারকে বেআইনি আখ্যা দেন তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তিনিও নিজাম প্যালেস ছাড়বেন না। নিজাম প্যালেসে জড়ো হন বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থকও। অশান্তি ছড়ায় নিজাম প্যালেসে।
সিবিআই অফিস লক্ষ্য করে ভিড় থেকে পাথরও ছোড়া হয়। কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আদালতে ভার্চুয়াল শুনানির আয়োজন করা হয়েছিল। অবশেষে শুনানি শেষের প্রায় চার ঘণ্টারও বেশি সময় পরে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।