নিখাদ ডেক্স : পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন নন্দীগ্রামে নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে জয়লাভ করেছেন মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ে। এই নন্দীগ্রামের মাটিই একসুতোয় বেঁধে দিয়েছিল মমতা-শুভেন্দুকে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে সব ভুলে সেই একই মাটিতে একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়েছিলেন তারা। ফলে দিনভর সবার চোখ ছিল নন্দীগ্রামে।
মানুষের আগ্রহ যেমন ছিল তেমনি, দিনভর এই আসনে চলেছে নানা নাটকীয়তা। মানুষের আগ্রহে ভাটা না ফেলে একবার মমতা এগিয়েছেন, তো একবার শুভেন্দু। তবে, শেষ হাসি ফুটল মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ের মুখেই। তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারীকে পরাজিত করলেন তিনি। সংবাদ সংস্থা এএনআই এর বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানাচ্ছে, ১২০১ ভোটে নন্দীগ্রামে জিতেছেন মমতা।
এরআগে, আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ১৭ রাউন্ড গণনার শুরুতেই ৬০০ ভোটে ফের এগিয়ে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ১৬ রাউন্ড গণনার শেষে মাত্র ৬ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন এগিয়ে ছিলেন শুভেন্দু।
গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। তারপর মমতা ও তার ভাইয়ের ছেলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে যান তিনি। ফলে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতা ঘোষণা করেন, সেখান থেকেই ভোটে লড়বেন তিনি।
তারপরই নীলবাড়ির লড়াইয়ে বাংলার রাজনীতির যাবতীয় সমীকরণ উল্টে যায়। আনুষ্ঠাানিকভাবে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন মমতা। ওই দিনই নন্দীগ্রামে পায়ে আঘাত পান। তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে বচসা চরমে ওঠে।
এর দু’দিন পর, ১২ মার্চ নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেন শুভেন্দু। তারপর থেকে বিজেপির হেভিওয়েট নেতারা শুভেন্দুর হয়ে সেখানে সভা করে এসেছেন। সেই তুলনায় নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সভা ছিল মমতার একারই। তবুও সেখানে জেতা নিয়ে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মমতা।
এমনকি ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে যেদিন ভোটগ্রহণ, সেদিন সেখানে থাকলেও, শুভেন্দুর মতো সকাল থেকে বুথে বুথে ঘুরতে দেখা যায়নি তাকে। বরং দুপুরে বয়ালে ঝামেলার খবর পেয়ে প্রথম বাইরে বের হন মমতা।অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দু’ঘণ্টা বুথের ভেতর বসেছিলেন মমতা। সেই সময় তাকে তাচ্ছিল্য করে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘খেলা তো হয়ে গেছে। ৮০ শতাংশ ভোট পড়ে গেছে। এখন আর কী করবেন।’ কিন্তু নন্দীগ্রামে ভোটের খেলায় মমতার কাছেই শেষমেশ গোল খেতে হলো তাকে।