হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক উগ্রবাদী নেতা মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ খবর নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম।
রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানিয়েছেন, ‘রোববার দুপুরে তাকে ওই মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।’
সম্প্রতি ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া উগ্রবাদী কেন্দ্রীয় নেতাদের ২০১৩ সালে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বেশ কয়েকজন উগ্রবাদী নেতাকে রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক মোদীবিরোধী আন্দোলনের সময় সহিংসতার একাধিক মামলায় উগ্রবাদী নেতা মামুনুল হকের নাম রয়েছে।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকেই মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করছিলেন উগ্রবাদী নেতা মামুনুল হক। সেই সময় থেকেই পুলিশ তার ওপর নজর রাখছিল।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ ও তেজগাঁও বিভাগের শতাধিক পুলিশ ওই মাদ্রাসাটা ঘিরে ফেলে। মাদ্রাসার দোতলার একটি কক্ষ থেকে মামুনুল হককে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়।
এরপর প্রথমে তাকে তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসির কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে মিন্টো রোডে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মূলত গতবছরের নভেম্বরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে আলোচনায় আসেন উগ্রবাদী নেতা মামুনুল হক। এরপর ভাস্কর্যের নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ডিসেম্বরে কুষ্টিয়া শহরে জাতির পিতার একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ভাঙচুর চালানো হয়।
ভাস্কর্য বিরোধিতা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় হেফাজতের আমির উগ্রবাদী জুনাইদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব উগ্রবাদী মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে।
এ বছর মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় হেফাজত। এর মধ্যে সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় সংঘাত-নাশকতার ঘটনায় উগ্রবাদী নেতা মামুনুল হকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
এরপর গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্টে এক নারীসহ আটক হয়ে আবারও আলোচনায় আসেন হেফাজতের এই উগ্রবাদী নেতা। যাকে তিনি নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছেন।