১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযুক্ত চাকরিচ্যুত রেজাউল সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করেছেন
মিজানুর রহমান, চরফ্যাশন থেকে৷৷
ভোলা চরফ্যাশন মধুমতি ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার রেজাউল কবিরের বিরুদ্ধে ব্যাংকের প্রায় ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে৷ চরফ্যাশন থানায় জিডি ও দুদক বরিশাল কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দেয়ার পর গতকাল ভোলা জেলা প্রেসক্লাবে নিজের আত্মরক্ষা এবং অপকর্মকে আড়াল করার জন্য রেজাউল সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়৷
চরফ্যাশন মধুমতি ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের অভিযুক্ত চাকরীচ্যুত কর্মকর্তা রেজাউল কবির নিজের অপকর্ম থেকে বাঁচতে চরফ্যাশনের কিছু সুনামধন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির উপর কাল্পনিক ও অবাস্তব দায় চাপানোর কৌশল হিসেবে এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন বলেও জানা যায়৷
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) চরফ্যাশন মধুমতি ব্যাংকের নতুন ম্যনেজার মোঃ ইয়াসিন উদ্দিন সোহেল জানান, ব্যাংকের ভোল্টে টাকা রাখার অনুমোদিত লিমিট হলো ১ কোটি টাকা মাত্র৷ কোটি কোটি টাকা ভোল্টে থাকবে কেন? তাছাড়া বিধি বহির্ভূত ব্যাংকের টাকা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কে দেওয়ার এখতিয়ার ব্যাংক কর্মকর্তার নেই। ব্যাংক একটি সুরক্ষিত ও বিধিবদ্ধ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কোন গ্রাহক ব্যাংকের টাকা দুই ভাবে আত্মসাত করার চেষ্টা করতে পারে৷ লোন নিয়ে তা পরিশোধ না করে আত্মসাতের চেষ্টা করা অথবা ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজসে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করা। এ ছাড়া অন্য সাধারন কোন গ্রাহকের পক্ষে টাকা আত্মসাতের কোন সুযোগ নেই। ব্যাংকে ১ টাকার অনিয়ম হলেও তা ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপর বর্তায়৷
তিনি আরও বলেন, সংবাদ সম্মেলনে এক ব্যবসায়ির বিরুদ্ধে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন রেজাউল কবির৷ সে ব্যক্তিসহ যে কয়জন গ্রাহক এবং প্রতিষ্ঠানের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন, ক্ষতিয়ে দেখা যায় তাদের কারো নামে উক্ত ব্যাংকের শাখায় কোন লোন একাউন্ট নেই৷ এ বিষয়ে গত ১৪ জানুয়ারি চরফ্যাশন থানায় জিডি করা হয়েছে এবং ১৫ জানুয়ারি পুলিশ সুপারের মাধ্যমে দুদক বরিশাল কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়৷ যার জিডি নং ৫৫৯৷ দুদক কার্যালয়ে রেজাউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেওয়াও হয়েছে। খুব দ্রুত তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অন্য দিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সাবেক ব্যাংক ম্যানেজার রেজাউল কবির প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলার গুইংঘার হাটে একটি গরুর খামারসহ স্বনামে বেনামে প্রচুর সম্পত্তি ও অর্থের মালিক। এছাড়াও তিনি জেলা সদরের অনেক প্রভাবশালীদের নিকট সুদের উপর বিপুল পরিমাণ টাকা লাগিয়েছেন। তার এক ভগ্নিপতি একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের জেলা প্রতিনিধি হওয়ার সুবাধে তাকে ব্যবহার করে উক্ত দুরভিসন্ধিমূলক সংবাদ সম্মেলন করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন বলে অনেকে জানিয়েছেন। গত রবিবার রেজাউলের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সমঝোতা করতে উক্ত সাংবাদিকসহ তার কিছু আত্মীয় দু’দফা ঢাকা মধুমতি ব্যাংক শাখায় গিয়েছিলেন৷ তারাই সমঝোতার জন্য চরফ্যাশন মধুমতি ব্যাংক শাখায় অডিট চলাকালীন এসেছিলো৷ পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়ে পরে ছেড়ে দেয়া হয়৷
চরফ্যাসন থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মনির হোসেন মিয়া জানান, নতুন পাশ হওয়া আইন অনুযায়ী টাকা আত্মসাতের মামলা গ্রহনের এখতিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের। ইতোমধ্যে বরিশাল দুদক কার্যালয়ে সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।