যশোর থেকে ঝিনাইদহের দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। আয়তনে ছোট হলেও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই সড়কের অবদান অনেক বেশি।
ফরিদপুর, যশোর, খুলনা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এবং বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে মসৃণ সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এ উদ্যোগ। এতে যানবাহন ও মালামাল পরিবহনের জন্য টেকসই যোগাযোগ স্থাপন হবে। সড়কের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রথম পর্যায়ে যশোর থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার মহাসড়ক উন্নীত করা হবে চার লেনে।
প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করার জন্য প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক।
প্রতি ডলার ৮৫ টাকা দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের বোর্ড ইতোমধ্যেই ঋণ অনুমোদন করেছে।
এমনকি বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে ঋণের বিষয়ে নেগোসিয়েশন (সমঝোতা) হয়ে গেছে। এখন বাকি শুধু ঋণচুক্তির। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্বব্যাংকের এ ঋণ ৪ বছরের রেয়াতকালসহ ৩৪ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণের সুদের হার ১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং সার্ভিস চার্জ শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বিশ্বব্যাংক উইংয়রে প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) সাহাবুদ্দীন পাটোয়ারি বাংলানিউজকে বলেন, যশোর থেকে ঝিনাইদহ সড়ক ফোরলেনে রূপ দিতে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। সড়কটি অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নেগোসিয়েশন হয়ে গেছে। প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন পেলেই সংস্থাটির সঙ্গে ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, নানা কারণে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। ভোমরা থেকে সাতক্ষীরা এবং নাভারন, যশোর হয়ে ঝিনাইদহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। এর মাধ্যমে পশ্চিমাঞ্চলীয় অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তোলার কাজ হবে সহজ। এতে ২ কোটি মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে আসবে নতুন গতি।
জাতীয় এবং আঞ্চলিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনা আছে এ অঞ্চলের। এই প্রকল্প সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহায়ক হবে। এ অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য খামার থেকে হাটে, রাজধানী ঢাকা এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোতেও যেতে পারে। এভাবে এই প্রকল্প বাণিজ্য এবং ট্রানজিট ও করিডোরকে শক্তিশালী করবে।
প্রকল্পের আওতায় রুটের উভয়পাশে স্লো মুভিং ভেহিক্যাল ট্রাফিক (এসএমভিটি) লেন নির্মাণ করা হবে। সড়কের যেখানে যানজট বেশি হবে সেখানে নির্মাণ করা হবে ফ্লাইওভার। এছাড়া রেলওয়ে ওভারপাস, সেতু, কালভার্ট, পেডিসটেইন ওভারপাস, আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে। শিল্পায়ন, নগরায়ন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) চন্দন কুমার দে বাংলানিউজকে বলেন, যশোর-ঝিনাইদহ সড়কটি আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। এই রুটকে ফোরলেনে উন্নীত করবো। অর্থের জন্য একটা টেনশন থাকে সেটা নেই। এই প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে। আমরা প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) তৈরি করছি। এটা একনেক সভায় অনুমোদন হলেই ঋণচুক্তি হবে।