বাসস : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সমালোচনার বাক্সবাহী বিএনপিসহ অনেকেই জনগণের পাশে নেই।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির এসময়ে সমালোচনার বাক্স নিয়ে বসে থাকা বিএনপি ও এমন আরো অনেকেই জনগণের পাশে নেই। বিবেকহীন অন্ধ সমালোচনা পরিহার করে তাদের জনগণের পাশে দাঁড়াবার আহবান জানান মন্ত্রী।
ড. হাছান আজ দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে করোনা পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের মাঝে সহায়তা চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও বিশ্বের শীর্ষ পত্রপত্রিকা যেখানে করোনা মোকাবিলায় সরকারের সক্ষমতা ও পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেছে, সেখানে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা প্রতিদিন যে ভাষায় শুধু সমালোচনাই করে যাচ্ছেন, তা অত্যন্ত দু:খজনক।’
ড. হাছান বলেন, “অবশ্যই সমালোচনা থাকবে, সরকারকে সবাই পরামর্শ দিতে পারে, সেই গণতান্ত্রিক রীতি আমরা সমাদৃত করি, কিন্তু অন্ধ ও বিবেকহীন সমালোচনা ও কোনো কাজে ভালো দেখতে না পারা, চোখ থাকতে অন্ধের মতো আচরণ দু:খজনক।”
তিনি বলেন, জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে প্রতিদিন গণমাধ্যমে উঁকি দিয়ে সমালোচনা করে বিএনপি নিজেদেরকে জনগণের কাছে হাস্যকর করে তুলছে।
তথ্য মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বহু এনজিও আছে যারা বিদেশি অর্থ পায়, এখন তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক প্রশ্ন রাখেন, কয়টি এনজিও এখন মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে? ’
ড. হাছান বলেন, ‘করোনাদুর্যোগে জনগণকে সহায়তায় সরকার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিহাসের বৃহত্তম ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের মোবাইল ফোনে সহায়তার টাকা পেয়ে যাচ্ছে, যা কেউ আশা করেনি, আগে কখনো এমনটি ঘটেনি। এসময় জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।’
বিভিন্ন দেশে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাশের দেশ ভারতে বিরোধী দলীয় জোট প্রধান সোনিয়া গান্ধী সেদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের সাথে একাত্মতা জানিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো একাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে সাংবাদিকরা করোনাকালে কাজ করছেন। অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েকজন মৃত্যুবরণ করেছেন। সাংবাদিকরা হাত গুটিয়ে বসে থাকলে মালিকেরা চাইলেও গণমাধ্যম চালু থাকতো না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানবিক বিবেচনায় সরকার সাংবাদিকদের সহায়তা করছে। এসময় তেমনিভবে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদেরও সাময়িক কষ্ট হলেও গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করতে ও তাদেরকে চাকুরিচ্যুত না করার জন্য পুনরায় অনুরোধ করেন।
গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় সরকারি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সকল মন্ত্রণালয়ে পত্র ও তাগিদ দেয়া হয়েছে যাতে করে সংবাদকর্মীদের বেতন দিতে সুবিধা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার আলোচনার কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ও করোনা উপসর্গে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে ইতোমধ্যে ৩ লাখ টাকা করে সহায়তা দেয়া হয়েছে, সেই পরিবারেরা আবেদন করলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আরও সহায়তা দেয়া হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদ ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল।
সহায়তাপ্রাপ্ত সাংবাদিক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তৃতা করেন আতাউর রহমান জুয়েল ও মোহাম্মদ তারিক আল বান্না। বক্তারা এ সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। এদিনের অনুষ্ঠানে ২০০ সাংবাদিককে চেক প্রদান করা হয়।
ডিইউজে সভাপতি জানান, চলমান সহায়তার প্রথম পর্বে এ পর্যন্ত ৪৮টি জেলায় সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাবের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কাছে সহায়তা পৌঁছেছে।