সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: চালক না চালিয়ে সহকারী দিয়ে ভাড়ায় চালানোর সময় সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে গেছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০ লাখ টাকার সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ট্রাকে করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এর আগে সেমাবার (৫সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে তালা উপজেলার মদনপুর এলাকায় এঘটনা ঘটে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স (ঢাকা মেট্রো ছ-৭১-৩০০০) চালক বশির উদ্দিন (বশির) এর নামে বরাদ্দ। নিয়ম অনুযায়ি তাকে এই গাড়ি চালানোর কথা। কিন্তু তিনি ওই অ্যাম্বুলেন্সটি না চালিয়ে তার সহকারী হাসানকে দিয়ে চালিয়ে থাকেন। তাকে কখনো ওই গাড়ি চালাতে দেখা যায়নি। এছাড়া সরকারি এই অ্যা¤ু^লেন্সে করোনা রোগি, পয়জনিং রোগি, গ্যাংগেরিং রোগি ও মরদেহ বহন করা নিষেধ। কিন্তু বশির মোটা অংকের অর্থের বিনিময় তার হেলপারকে দিয়ে সব ধরনের রোগি এই অ্যা¤ু^লেন্সে পরিবহণ করে থাকেন। ঘটনার দিন সামেক হাসপাতালের চালক বশিরের সহকারী হাসান সাতক্ষীরা থেকে একটি মরদেহ ওই অ্যাম্বুলেন্সে করে তালায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফিরে আসার পথে দ্রুত গতিতে চালিয়ে আসার সময় তালা উপজেলার মদনপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি সড়কের পাশে একটি গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে মুচড়ে পাশের ডোবায় পড়ে যায়। এঘটনায় গুরুতর আহত হয় হেলপার হাসান। গোপনে তাকে সামেক হাসপাাতলে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মঙ্গলবার রাতে তাকে সামেক হাসপাতাল থেকে লাবসায় নিজ বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এবিষয় জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে সামেক হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক বশির দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, হাসান সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন স্বেচ্ছাসেবক চালক। ওই দিন একটি রোগি খুলনায় নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে। কোন মরদেহ নেয়া হয়নি। সামেক হাসপাতালের সব অ্যাম্বুলেন্স দেখভাল করার দায়িত্ব তার উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, লোক না থাকলে আমি নিজেও মাঝে মধ্যে গাড়ি চালাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামেক হাসপাতালের এক কর্মচারী বলেন, চালক নিজে না চালিয়ে হেলপার দিয়ে চালানোর কারণে অ্যাম্বুলেন্স আজ দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। আজ ট্রাকে করে ঢাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানি। আমার জানামতে এটি ৬ থেকে ৭ বছর আগে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিলো।
এবিষয় সামেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, লোকবল কম থাকায় হাসান নামের একজন স্বেচ্ছাসেবক চালক দিয়ে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল। তবে কি কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত করে দেখা হবে।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের পরিচালক ডা: কুদরত ই খোদা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামতের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আমার সময়ে ক্রয় করা না সেজন্য এটির দাম সম্পর্কে এখন কিছু বলতে পারছি না। অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনার সময় ড্রাইভার নাকি অন্য কেউ চালাচ্ছিলো বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।