নিখাদ বার্তাকক্ষ : ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ৬০তম ব্যাচের ফায়ারফাইটারদের বুনিয়াদি কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ জুলাই মিরপুরস্থ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে সকাল ৯টায় এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি, জি, এম ফিল মহোদয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের পরিচালকগণ, ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কুচকাওয়াজে একটি পতাকাবাহী দল ও ৩টি কনটিনজেন্ট অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সকাল ৯টায় কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলে বিউগলের সুর বেজে ওঠে। প্যারেড কমান্ডার সকলকে সাবধান করে প্রধান অতিথিকে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জ্ঞাপন করেন। এরপর সকল নবীন ফায়ার ফাইটারগণ দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকার শপথ বাক্য পাঠ করেন। প্রধান অতিথি ২৬৭ জন নবীন ফায়ারফাইটার ও ৩৯ জন নবীন ডুবুরিদের মধ্য থেকে শারীরিক যোগ্যতা, বুদ্ধিমত্তা, শৃঙ্খলা, আচার-ব্যবহার; লিখিত, ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দক্ষতার ভিত্তিতে নির্বাচিত ৪ জন চৌকসকে ‘চৌকস পদক’ পরিয়ে দেন। এদের মধ্যে একজন ডুবুরি এবং অপর ৩ জন ফায়ারফাইটার। উল্লেখ্য, একই দিন একই সময়ে ফায়ার সার্ভিসের খুলনা বিভাগীয় সদরে অপর ১৫৯ জন ফায়ারফাইটারের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন নবীন ফায়ারফাইটার ও ডুবুরিদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। ভাষণের শুরুতে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একই সাথে তিনি বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মরণ করেন। সাফল্যের সাথে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করায় তিনি নবীন ফায়ারফাইটার ও ডুবুরিদের অভিনন্দন জানান। ফায়ারফাইটারদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “তোমরা জানো, বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ফায়ার সার্ভিসের মতো একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে মানুষের জান-মাল রক্ষায় তোমাদের আত্মনিয়োগ করতে হবে। তোমাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শেষ হলেও এখন থেকে শুরু হলো বাস্তব প্রশিক্ষণ। প্রতিটি দুর্ঘটনা একেকটি প্রশিক্ষণস্থল। বাস্তব প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে সর্বদা মানুষের জান-মাল রক্ষায় নিজেকে উৎসর্গ করতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা বৃদ্ধির কাজে তোমরা সবসময় নিজেকে নিয়োজিত রাখবে বলে আমি আশা করি।” প্রধান অতিথির ভাষণ শেষে সমম্মিলিতভাবে ৪টি কনটিনজেন্টের সদস্যরা জাতীয় ধ্বনি দিয়ে মাননীয় প্রধান অতিথি ও জাতির প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। কনটিনজেন্টের সদস্যরা জলদি চলে মার্চপাস্ট-এর মাধ্যমে প্রধান অতিথিকে সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ড ত্যাগ করেন। এর মাধ্যমে কুচকাওয়াজ পর্বের সমাপ্তি হয়।
কুচকাওয়াজের পর শুরু হয় বর্ণাঢ্য মহড়া প্রদর্শন পর্ব। এতে ফায়ার সার্ভিসের অপারেশনাল কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ মহড়া প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহড়ার প্রতিটি পর্ব গভীর মনোযোগ সহকারে প্রত্যক্ষ করেন। তিনি তাঁর প্রদত্ত সমাপনী বক্তব্যে পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), ট্রেনিং কমপ্লেক্সের অধ্যক্ষ এবং প্যারেড ও মহড়ার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে সুন্দর প্যারেড ও মহড়া প্রদর্শনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। খবর ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।